শুভ চক্রবর্ত্তী, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা মেঘনা, তিতাস ও বুড়ি নদী ঘেরা জনপদ হওয়ায় বর্ষা এলেই উপজেলার অনেক এলাকা তলিয়ে যায় পানিতে তখন নৌকা হয়ে উঠে এ জনপদের উপযোগী জলযান। আর এই বর্ষা মৌসুমে উপযোগী নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নৌকা তৈরীর মিস্ত্রিরা।
সরজমিনে জানা যায়, নবীনগর উপজেলার সাদেকপুর,আয়তলা, মনিপুর, চিত্রি, চর লাপাং এ তৈরি হচ্ছে মাছ ধরা ও চলাচলের উপযোগী ট্রলার বা ইঞ্জন চালিত নৌকা। কোনো কোনো নৌকার মালিক তার পুরোনো নৌকাটিকে-ই নতুন কাঠ, আলকাতরা দিয়ে মেরামত করে নিচ্ছে।
যাতায়াত, ফসল বা গৃহপালিত পশুর খাদ্য ঘাস আনা-নেওয়া, খেয়া পারাপার, মাছ ধরা, হাট-বাজারে মালামাল আনা-নেওয়া সহ নানান কাজে নৌকা বহুকাল ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে নবীনগর উপজেলার বগডহর, আলমনগর, লাপাং, শিবপুর, বাঙ্গরা, রতনপুর শ্রীরঘর, খাগাতুয়া, লহরী, রাধানগর ইত্যাদি গ্রাম গুলোতে।
নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের নৌকার মিস্ত্রি মধু সূত্রধর জানান, ছোট বেলা থেকেই বাবার সাথে নৌকা তৈরির কাজ করছি। বর্ষা আসার এক-দের মাস আগে থেকেই নৌকা তৈরির কাজ বেড়ে যায়। নৌকা তৈরিতে বিশেষ কোন কাঠ বা নিদিষ্ট ভাবে কোনো কাঠ ব্যবহার হয় না। আগে ভাল কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরী করতাম, এখন কড়াই, হিজল ও মেহগনি দিয়েই বেশী নৌকা তৈরি করি। নৌকা তৈরিতে কাঠ ছাড়াও মাটিয়া তৈল, আলকাতরা, তাড়কাটা, গজাল, পাতাম ইত্যাদি লাগে।
উপজেলার শিবপুর গ্রামের অবনিনাথ সূত্রধর জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে বৈশাখ মাস থেকেই নৌকা তৈরির কাজ শুরু করেছি। তবে, এবার আগ থেকেই অনেক অর্ডার ও পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, গত বছরে দুইশ’র বেশি নৌকা বিক্রি করেছি। প্রতিদিন ৪/৫ জনে একটি ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করতে পারি। ১২ হাতের একটি নৌকা তৈরিতে ৭ হাজার ৮ হাজার টাকা খরচ হয় আর বিক্রি হয় সারে বার হতে পনের হাজার টাকায়। একটু ছোট ডিঙ্গি তৈরিতে ৫ হাজার টাকা খরচ হয় বিক্রি হয় সাত থেকে আট হাজার টাকায়। এ বছর কাঠ ও নৌকা তৈরির করার আসবাবপত্রের অনেকটা বেশি হওয়াতে তৈরি করা নৌকাও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে ।