রাশিয়ায় কারাবন্দী অবস্থায় বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর ঘটনায় ‘অবিলম্বে তদন্ত’ দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এ ঘটনায় রুশ সরকারকে দায়ী করে রুশ দূতাবাসের কূটনীতিকদের তলব করেছে যুক্তরাজ্য।
নাভালনির মৃত্যুর খবর শোনার পরপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র তদন্ত দাবি করেছেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে এয়ারফোর্স ওয়ানে চেপে আকাশপথে ভ্রমণ করছিলেন ওই মুখপাত্র।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নাভালনির মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদকে ভর্ৎসনা করেন যারা ইউক্রেনের জন্য অর্থায়ন আটকে রেখেছে।
হোয়াইট হাউজের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাইডেন অব্যাহতভাবে পুতিনের বিরুদ্ধে অবস্থানের জন্য নাভালনির প্রশংসা করেন। এমন কী তার উপর বিষ প্রয়োগ, বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করে দেশে ফিরে এসে তাকে কারারুদ্ধ করার পরেও তিনি তার অবস্থান থেকে নড়েননি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ২০২০ সালে নাভালনিকে হত্যা করার প্রচেষ্টার পর তিনি প্রবাসে নিরাপদেই থাকতে পারতেন কিন্তু এটা জেনেও যে তিনি যদি তার কর্মকান্ড চালিয়ে যান তাহলে তিনি সম্ভবত কারারুদ্ধ হবেন, এমন কী তাকে হত্যাও করা হতে পারে, তিনি দেশেই ফিরলেন কারণ নিজের দেশের প্রতি তার গভীর বিশ্বাস ছিল।
বাইডেন বলেন রুশ কর্মকর্তারা তাদের কাহিনী বলবে কিন্তু , এ ব্যাপারে ভুল করার কোন অবকাশ নেই নাভালনির মৃত্য়ুর জন্য পুতিনই দায়ী।
এদিকে নাভালনির মৃত্যুর ঘটনায় রুশ সরকারকে দায়ী করেছে যুক্তরাজ্য। গতকাল যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এ ঘটনায় যুক্তরাজ্যে রুশ দূতাবাসের কূটনীতিকদের তলব করা হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষের পূর্ণাঙ্গ দায়ভারের বিষয়টি তাঁদের জানিয়ে দেয়া হবে।
এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে নাভালনির মৃত্যুর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যখন কেউ কোনো রাষ্ট্রে কারাবন্দী অবস্থায় মারা যান, তখন সেটার ঝুঁকি কিংবা দায়ভার রাষ্ট্রকে নিতে হয়।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি। গত এক দশকে রাশিয়ায় বিরোধী নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
২০২১ সাল থেকে কারাগারে বন্দী ছিলেন নাভালনি। গত বছরের শেষ দিকে উত্তর সাইবেরিয়ার ইয়ামালো-নেনেটস অঞ্চলের কারা কলোনিতে নেওয়া হয় তাকে। গতকাল সেখানেই নাভালনির মৃত্যু হয়।