ইনসেপ্টা, স্কয়ার, দি একমি, হেলথকেয়ার, অপসোনিনসহ বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের নকল ঔষধ তৈরি ও বিক্রয়ের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ কবির হোসেন, মোঃ মোরশেদ আলম শাওন, মোঃ নাজিম উদ্দিন, আল আমিন চঞ্চল, মোঃ তৌহিদ, মোঃ সাগর, মোঃ আবির, মোঃ রুবেল, মোঃ পারভেজ ও আইনুল ইসলাম।
রবিবার (৫ জুন ২০২২) রাজধানীর মিটফোর্ড, সাভার ও কুমিল্লা জেলায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম।
এসময় তাদের হেফাজত হতে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর প্যানটোনিক্স নামীয় নকল ট্যাবলেট ৯,১৮,৪৫৬ পিস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর সেকলো নামীয় নকল ট্যাবলেট ৪,১০,৪০০ পিস, দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিঃ এর মোনাস ১০ নামীয় নকল ট্যাবলেট ৫৮,৫০০ পিস, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর সারজেল নামীয় নকল ট্যাবলেট ৯৬,০০০ পিস, অপসোনিন ফার্মা এর ফিনিক্স নামীয় নকল ট্যাবলেট ৫৮,৮০০ পিস, কমোদিনি ফার্মা লিঃ এর থিজা নামীয় নকল ট্যাবলেট ৬,২৪০ পিস, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর মাইজিড নামীয় নকল ট্যাবলেট ৬,৪৮০ পিস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর নামীয় নকল ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস ট্যাবলেট ৪১,৪০০ পিস, ব্রনসন ইউএসএ এর জিংকো বাইলোবা নামীয় নকল ট্যাবলেট ৩,০০০ পিস এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ঔষধ ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস নামীয় নকল ট্যাবলেট ৬৫ কেজি, প্যানটোনিক্স নামীয় নকল ট্যাবলেট ৩০ কেজি, পেরিয়াক্টিন নামীয় নকল ট্যাবলেট ৩০ কেজি, খোলা- মাইজিড নামীয় নকল ট্যাবলেট ৫০,৪০০ পিস। এছাড়াও ডায়াস ছোট বড় ১০টি, ফয়েল পেপার- ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস নামীয় ট্যাবলেট ৪৪ কেজি, মাইজিড নামীয় নকল ট্যাবলেট লেখা কয়েল ৩০টি, থিজা ট্যাবলেট লেখা ৩০ কেজি, সিলিন্ডার ৫টি এবং ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস ট্যাবলেট এর খালি মোড়ক ৫০০ পিস উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
আজ সোমবার (৬ জুন ২০২২) বেলা ১১:৩০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার)।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অন্যান্য আসামীদের সাথে পরস্পর যোগসাজশে দেশিয় নামীদামী ব্র্যান্ডের বহুল প্রচলিত ঔষধসমূহ বিপুল পরিমাণে নকল ঔষধ তৈরি করে বাজারে ছড়িয়ে দিতো। নকল ঔষধ তৈরির চক্রটির মূলহোতা মোঃ কবির হোসেন ও মোরশেদ আলম শাওন নকল ঔষধ তৈরি করে সহযোগি আসামী নাজিম, আল আমিন, তৌহিদ, সাগর, আবির, রুবেল, পারভেজ ও আইনুলদের মাধ্যমে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসযোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাজারজাত করতো।
তিনি বলেন, এই সব সকল ঔষধ এর ইনগ্রিডিয়েন্টস এ মূলত এ্যাক্টিভ পার্টই থাকে না। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এবং শ্বসনতন্ত্রে মারাত্মক ক্ষতি হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা মূলত বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের ঔষধ কারখানায় নিজস্ব ঔষধ তৈরির পাশাপাশি তারা এ নকল ঔষধগুলো তৈরি করে থাকে। যেসব ঔষধ বেশি ব্যবহৃত হয় সেগুলোই নকল হয় বেশি। নকল ঔষধ তৈরি বন্ধ করতে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রধানকে সহযোগিতা করার আহবান জানান তিনি।
গ্রেফতারকৃতদেরকে কোতয়ালী থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ রাজীব আল মাসুদ বিপিএম এর নির্দেশনায় কোতয়ালী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এর সমন্বয়ে যৌথভাবে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়।