আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) দুই দিনব্যাপী বার্ষিক প্রশিক্ষণ সম্মেলন শেষ হয়েছে। এবারের প্রশিক্ষণ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নারী পুলিশের গৌরবময় যাত্রা ও অর্জন ১৯৭৪-২০২২’। বিকালে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ-এর কনফারেন্স রুমে আয়োজিত প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা পারিবারিক সহিংসতা, সাইবার বুলিং, বাল্যবিবাহ রোধে তাদের কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। দেশের বাইরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে আমাদের নারী পুলিশ সদস্যরা সকলের প্রশংসা অর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে নারীরা সামনে ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে সেবা দিয়েছেন, তথ্য আদান প্রদান করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অসামান্য অবদান রয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর দৃশ্যমান অগ্রযাত্রার কৃতিত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার। তিনি আরও বলেন, আমাদের মেয়েরা জাগছে। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। কৃষিতে সাফল্যের ষাট ভাগ অবদান নারীর, পোশাক শিল্পে এক চতুর্থাংশ নারী কাজ করছেন। সমাজে মেয়েদের দৃশ্যমানতা অনেক পাল্টেছে, আরো পাল্টাতে হবে। নারী যত বেশি এগিয়ে যাবে ততবেশি সমাজ, দেশ এগিয়ে যাবে।
প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষণের মূল্য অনেক। তিনি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতাকে আরও শাণিত করে পেশাদারিত্ব বাড়ানোর আহবান জানান।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন পুলিশ স্টাফ কলেজের ভারপ্রাপ্ত রেক্টর ড. এ এফ এম মাসুম রব্বানী। বিপিডব্লিউএন’র সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডিআইজি আমেনা বেগম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রশিক্ষণের অনুভূতি ব্যক্ত করেন গাজীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডা. নন্দিতা মালাকার।
আইজিপি বলেন, করোনাকালে মানবিকতার চরম বিপর্যয়ের সময়ও আমাদের নারী সদস্যরা জনগণের পাশে থেকে তাদেরকে সেবা দিয়ে সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
পুনাক সভানেত্রী বলেন, নারীকে পেছনে ফেলে সমাজ এগিয়ে যেতে পারে না। সমাজে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
পরে প্রধান অতিথি অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার নারী পুলিশ কর্মকর্তাগণ, এশিয়া রিজিওনের নারী পুলিশ কর্মকর্তাগণ, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের নারী কর্মকর্তাগণ, ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব উইমেন পুলিশের বোর্ড সদস্যগণ সরাসরি এবং ভার্চুয়ালি এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।