আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের পাঁচ অভিযাত্রীর কেউই আর বেঁচে নেই। ধারণা করা হচ্ছে, পানির প্রচণ্ড চাপে ডুবোযানটি বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে এই খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড। এছাড়াও বিবৃতির মাধ্যমে খবরটি নিশ্চিত করেছে ওই সাবমেরিন পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ওশেনগেট’।
টাইটানিকের কাছে যে ধ্বংসাবশেষ মিলেছে, তা ডুবোযান টাইটানের বলে নিশ্চিত হওয়ার পরপরই এই বিবৃতি আসে পরিচালনাকারী সংস্থা ওশেনগেট থেকে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বস্টনে ইউএস কোস্ট গার্ড ঘাঁটিতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের। তিনি জানান, তারা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছেই অপর একটি ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান। সেখানে ডুবোযান টাইটানের পাঁচটি বড় অংশ পাওয়া যায়। আর এসব অংশ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পানির নিচে যাওয়ার পর এতে বিস্ফোরণ হয়েছিল।
ডুবোযানটিতে ঠিক কখন বিস্ফোরণ হয়েছিল সেটি এখনো জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের । ছবি: সিএনএন
তিনি আরও জানিয়েছেন, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ থেকে ১৬০০ ফুট দূরে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে টাইটানের সামনের নাকের অংশ, কাঠামোর বাইরের অংশ এবং বড় একটি ধ্বংসস্তূপ রয়েছে।
নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হবে কিনা এটি এখনই বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। কারণ বর্তমানে সেখানকার অবস্থা তেমন ভালো নয়।
এদিকে, ওশেনগেটের এক বিবৃতি জানিয়েছে, তারা দুঃখজনকভাবে হারিয়েই গেছেন। তারা সত্যিকারের অভিযাত্রী ছিলেন- যারা অ্যাডভেঞ্চার, গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান এবং বিশ্বের সমুদ্র রক্ষায় একটি স্বতন্ত্র বিশ্বাসে একমত পোষণ করতেন। এই কঠিন সময়ে এই পাঁচজন ও তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে। আমরা এই মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছি।
সাবমেরিনটিতে পাইলটসহ ৫ আরোহী ছিলেন। আরোহীরা হলেন, ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান (১৯), টাইটান প্রস্তুতকারী কোম্পানি ওশনগেটের শীর্ষ নির্বাহী স্টকটন রাশ (৬১) এবং সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেট (৭৭)। ডুবোযানটির পাইলট ছিলেন স্টকটন রাশ নিজেই।
কানাডার কাছে আটলান্টিক মহাসাগরে পানির নিচে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পর্যটকদের দেখাতে গত রোববার (১৮ জুন) রওনা দিয়ে নিখোঁজ হয় সাবমেরিন টাইটান। ডুব দেয়ার পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় টাইটানের সঙ্গে পানির ওপরে থাকা নিয়ন্ত্রক জাহাজ পোলার প্রিন্সের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।