তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি তাদের জনপ্রিয়তার অবস্থা জানে বলেই তাদেরকে নির্বাচনী ভীতি পেয়ে বসেছে। এ কারণে তারা নির্বাচনের পথে না হেঁটে ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে।’
মন্ত্রী আজ দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন সম্মেলন কক্ষে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট (এনআইএমসি) আয়োজিত ‘সড়ক নিরাপত্তা রিপোর্টিং’ শীর্ষক সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘নির্বাচনের ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি’ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিকে আসলে নির্বাচনী ভীতি পেয়ে বসেছে। ভীতি পাওয়া স্বাভাবিক, কারণ ২০০৮ সালে বিএনপি সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। পরবর্তীতে উপনির্বাচনে তারা ৩০টি আসন অতিক্রম করতে পেরেছে। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন বর্জন করেছিল। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব দলের ঐক্য করে ড. কামাল হোসেন সাহেবের মতো মানুষকে ‘হায়ার’ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে মহিলা আসনসহ মাত্র ৭টি আসন পেয়েছিল। তারা তাদের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জানে, নির্বাচনে সাফল্য কতটুকু হতে পারে সেটি জানে, সে জন্য তাদেরকে নির্বাচনী ভীতি পেয়ে বসেছে। ফলে ষড়যন্ত্রের পথেই হাঁটছে তারা।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাই, বিএনপি নির্বাচন ভীতি কাটিয়ে উঠে নির্বাচনে অংশ নিক। অন্যান্য সমস্ত গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবে এখানেও নির্বাচনকালীন সরকার হবে চলতি সরকার এবং নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সেখানে সরকারি দল আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে এবং বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের মন্তব্য ‘আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কথা শুনলে একাত্তরের শান্তি কমিটির কথা মনে হয়’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘মির্জা সাহেবের বাবা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন, পাকিস্তানপন্থী ছিলেন। স্বাধীনতার পরে মির্জা ফখরুল সাহেবও অনেকদিন আত্মগোপনে ছিলেন, এ জন্য উনার বেশি বেশি শান্তি কমিটির কথা মনে পড়ে, এছাড়া অন্য কিছু নয়। তারা যখনই রাজনৈতিক কর্মসূচি করে, হয় নিজেরা মারামারি করে অথবা পুলিশের সাথে মারামারি করে। দেশে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা স্থিতি বজায় থাকে সে জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা শান্তি সমাবেশ করছি।’
এর আগে সেমিনারের বিষয় সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘একটা সড়ক দুর্ঘটনা শুধু একজন মানুষকে পঙ্গু বা হত্যা করে তা নয়, পুরো পরিবারকে হত্যা করে, পঙ্গু করে দেয়। এটিকে বন্ধ করার জন্য যানবাহন মালিক, চালক, শ্রমিক, আইন রক্ষাকারীসহ আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। একইসাথে টেলিভিশনগুলোকে নিজস্ব উদ্যোগে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে। রাজনীতি নিয়ে এতো টক শো হয়, সড়ক নিরাপত্তা নিয়েও টক শো হওয়া প্রয়োজন, ভালো রিপোর্টিং হওয়া প্রয়োজন।’
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফায়জুল হকের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আল মাহবুব উদ্দীন আহমেদ, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার, বার্তা সংস্থা ইউএনবির উপদেষ্টা সম্পাদক ফরিদ হোসেন, বিআরটিএ পরিচালক (সড়ক নিরাপত্তা) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রাব্বানী, এশিয়া-প্যাসিফিক ইনস্টিটিউট ফর ব্রডকাস্টিং ডেভেলপমেন্ট (এআইবিডি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাবিল তিরমাযি, এনআইএমসি পরিচালক ড. মো. মারুফ নওয়াজ ও সেমিনার পরিচালক মোহাম্মদ আবু সাদিক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এআইবিডি’র সহায়তায় আয়োজিত দিনব্যাপী সেমিনারে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২০জন সাংবাদিক অংশ নেন।বাসস