ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই নির্বাচনের জন্য ইসি পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবে। তবে সংস্কার কমিশনের কোনও প্রস্তাব সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় হলে বিএনপি বাধা দেবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা আজ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কারণ, তারা নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। তারা এই মুহূর্তে কী কার্যক্রম করছেন এবং জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে তাদের প্রস্তুতি কী, এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা মতবিনিময় করেছি। আমরা জেনেছি কমিশনের পক্ষ থেকে তারা একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল, তারা কবে কী করবেন। এটা তারা প্রচলিত আইন অনুযায়ী করেছেন। এর মধ্যে তারা ভোটার তালিকা আপডেট করেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৩০ লাখ ভোটার যুক্ত হচ্ছে, যাদের যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও আগে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। তারা বাদ পড়ে গেছিল। এর মধ্যে আবার ১৫ লাখ ভোটার বাদ পড়ে যাবে, কারণ তারা মারা গিয়েছে। তার মানে নতুন করে ১৫ লাখ ভোটার যারা আগেই যোগ্য হয়েছিল তারা যুক্ত হচ্ছেন। তবে বাদের তালিকায় আরও কিছু ভোটার যুক্ত হতে পারে, কারণ মৃতদের তালিকা করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে। তবে আমরা সবাই জানি আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ মৃত্যুর পর রেজিস্ট্রেশন করে না। এগুলো অনুসন্ধানের কাজ চলছে।
এখন নির্বাচনের বিষয় সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী একটা সরকার পদত্যাগ করলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়, এটা আইন। তবে এই আইন অনুযায়ী এখন দেশ চলছে না। তাই এই মুহূর্তে রাজনৈতিক মতামতের ভিত্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করতে হবে এবং তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবেন।
তিনি উল্লেখ করেন, সবকিছু আলাপের পর আমাদের কাছে মনে হয়েছে তাদের কথায় যে, আগামী মে মাস-জুন মাসের মধ্যে তারা (ইসি) পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবেন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে। তবে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন তাদের নাই। যদি মে ও জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ প্রস্তুতি থাকে, তাহলে কারও কোনও প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকলে সেটা দূর করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান করা উচিত।
এক প্রশ্ন জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন তারিখ ঘোষণা করার দায়িত্ব সরকারের, তাই আগামীকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের একটি আলোচনা রয়েছে। আমরা সেখানে এই প্রসঙ্গ তুলব।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের যে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা আমার মনে হয় তিনি সেটা নিচ্ছেন। কমিশন যে সুপারিশ করবে সেগুলো নিয়ে সরকার সংশ্লেষদের সঙ্গে আলোচনা করবে। করে যে সিদ্ধান্ত হবে সেই সিদ্ধান্তের আলোকে যদি আইনের পরিবর্তন হয় বা বিধানের পরিবর্তন হয় নির্বাচন কমিশন কিন্তু সেটা মানতে হবে।