অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আগামী বছরই রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার দেখা যাবে। তবে তিনি এও বলেছেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, জানি না আসলে কী হবে।’
শনিবার ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএসের চার দিনের সেমিনারের উদ্বোধনী পর্বে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও সৌদি আরব- এসব দেশকে উপেক্ষা করে ‘দরিদ্র দেশ’ বাংলাদেশের কি ধনী দেশ হওয়া সম্ভব? উপদেষ্টার কাছে এ প্রশ্ন করেছিলেন ব্যবসায়ী তানভির মোহাম্মদ দিপু।
জবাবে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ‘তখন (নির্বাচিত সরকার আসার পরে) সবাই মিলে করতে পারি। তখন সবাই মিলে ভাবা যাবে- কীভাবে হতে পারে।’
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, অর্থনৈতিক ও আয়বৈষম্য এই মুহূর্তে বড় একটি দুশ্চিন্তার বিষয়। বৈষম্য দূর করতে মানসম্পন্ন শিক্ষা দরকার, যেখান থেকে অনেক দূরে রয়েছে বাংলাদেশ।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, গত সরকারের আমলে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে পদ্মা সেতুসহ বেশ কয়েকটি ভালো প্রকল্প আছে। কিন্তু ওই সব প্রকল্পের মধ্যে অনেকগুলোই ‘প্রেস্টিজ প্রকল্প’ বা সুখ্যাতি অর্জনের জন্য নেওয়া হয়েছিল। এসব নিয়ে কী করা যায়, তা ভেবে দেখা হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ কীভাবে সমতামূলক সমাজ নির্মাণ করতে পারে—এ প্রসঙ্গে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বড় ধরনের সম্পদের স্বল্পতায় আছে। অনেক টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়েছে; মানুষের টাকা ব্যাংকে আছে, কিন্তু ব্যাংকের টাকা বাইরে চলে গেছে। বেক্সিমকোর মতো বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্থিতিপত্রে অনেক টাকা থাকলেও বাস্তবে দেশের মধ্যে নেই। শ্রমিকদের মজুরি দিতে হয়। কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই বাস্তবতায় সমতামূলক সমাজ নির্মাণ কঠিন। সম্পদস্বল্পতার মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানো কঠিন বলে মন্তব্য করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বলেন, এখন ডায়ালাইসিস মেশিন কেনা হবে নাকি জনস্বাস্থ্যে বিনিয়োগ করা হবে—এটা নৈতিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি মনে করেন, এই নৈতিক উভয়সংকটের জবাব অমর্ত্য সেন বা জন রলসের মতো অর্থনীতিবিদেরাও দিতে পারবেন না।
এদিকে গত ২৪ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আগামী নির্বাচন কবে হবে, তা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে। এ নিয়ে বাকি যাঁরা কথা বলছেন, সেগুলো তাদের ব্যক্তিগত মতামত।