নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এখন ‘ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’
বুধবার সকাল থেকেই নিচতলা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনটির তৃতীয় তলায় জমে থাকা ইটের খোয়া ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কার করা হচ্ছে। দোতলায় জমে থাকা আবর্জনা ইতোমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে।
প্রায় এক বছর পরিত্যক্ত থাকার পর গত বুধবার থেকে ১০ তলাবিশিষ্ট ভবনটির পরিষ্কার করা শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সেখানে ১০-১২ ব্যক্তিকে পরিষ্কারের কাজ করতে দেখা গেছে। তারা বলেছেন, পুরো ভবন পরিষ্কার করবেন তারা। আর ভবনটির সামনে প্লাস্টিকের চেয়ারে বেশ কয়েক ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখা গেছে।
নতুন ব্যানার টানানোর বিষয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ করা ব্যক্তিরা বলেন, পুরো ভবনটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্তদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই ভবনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তি ও শহীদ পরিবারের জন্য অফিস করা হবে। তবে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামের প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে তারা কিছু বলতে রাজি হননি। তারা বলেন, পুরো ভবনের কোন তলায় কী হবে, তা ছাত্র-জনতা ঠিক করবে।
গত বছরের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন বিকেলেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবনটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর পর বেশ কিছুদিন ধরেই সেখানে চলে লুটপাট। ভবনটির আসবাব ও ধাতব জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে পরিত্যক্ত ভবনটি ছিন্নমূল মানুষসহ রিকশাচালক ও শ্রমিকদের শৌচাগারে পরিণত হয়। ভাসমান মানুষের নেশা ও আড্ডাস্থলও ছিল এটি। মলমূত্র ও আবর্জনার স্তূপ জমে থাকার কারণে উৎকট গন্ধে ভবনটির সামনের সড়ক দিয়ে চলতে গেলে নাক চেপে যেতে হতো।
কয়েক মাস আগে ‘জুলাই যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয়’ ব্যানার টানানো হলেও ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায়ই ছিল। এবার নতুন ব্যানার টানিয়ে ভবনটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে।
রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় দলটির কার্যালয়ের পুরোনো ভবন ভেঙে ১০ তলাবিশিষ্ট নতুন এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের ২৩ জুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ভবনটি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তৈরি করা হয়।
সূত্র: ইত্তেফাক