ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নিলেও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশটিকে ‘ঘায়েল’ করতে চাইছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়া সংকটে পড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ‘শাপে বর’ তত্ত্ব দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞাকে রাশিয়ার জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষক ওয়েবসাইট ক্যাস্টেলুম ডট এআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২২ ফেব্রুয়ারির আগে থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ২ হাজার ৭৫৪টি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলার পরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও অন্তত ২ হাজার ৭৭৮টি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ফলে সবমিলিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৩২টি। দিন দিন নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা বাড়ছেই।
নিষেধাজ্ঞার সংখ্যায় ইরানকেও ছাড়িয়ে গেছে রাশিয়া। ইরানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৬১৬টি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা নানা নিষেধাজ্ঞায় এরই মধ্যে রুশ অর্থনীতি প্রভাবিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন লন্ডন বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ লিন্ডা ইউয়েহ।
লিন্ডা ইউয়েহ বলেন, রাশিয়ায় সুদের হার বেড়ে এর মধ্যে ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যার ফলে ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস কেনা বন্ধ করার যে পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র, তা বাস্তবায়িত হলেও রুশ অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, রুশ অর্থনীতি ১২ শতাংশ সংকুচিত হওয়ার সম্ভাবনার আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা রাশিয়ার মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
তবে আন্তর্জাতিক এসব নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার জন্য ইতিবাচক হতে পারে বলে মনে করছেন ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার মিত্র দেশ বেলারুশের নেতা আলেকসান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে মস্কোতে এক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘এমন সময়ে সুযোগ পাওয়া যায় অর্থনীতি শক্তিশালী করা ও প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার’।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিণতি সব রাশিয়ানরা ভোগ করবে। রুশ জনগণের অর্থে এখন টান পড়েছে। রাশিয়ার শিশুরাও ভবিষ্যতে এই পরিণতি ভোগ করবে।