ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নৈরাজ্যের শঙ্কা: আওয়ামী লীগের গোপন তৎপরতা নিয়ে পুলিশের অ্যালার্ট

সাংবাদিক

 

কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগকে ঘিরে হঠাৎই তৎপর হয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশঙ্কা, দলটি নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনায় থাকতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে দেশের বিভিন্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে জরুরি সতর্কবার্তা।

এসবির পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী গোপনে সংগঠিত হয়ে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারে। বিশেষ করে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে অনলাইন-অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারণা চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) এসবির রাজনৈতিক উইং থেকে এই বিশেষ বার্তাটি পাঠানো হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেন এসবির ডিআইজি (রাজনৈতিক)। চিঠিটি ডিএমপি কমিশনার, সিটি এসবি, বিভাগীয় উপ-পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম ও খুলনার স্পেশাল পুলিশ সুপার এবং দেশের সব জেলা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে সরকারবিরোধী দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগঠনগুলো একাধিক কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সময়ে বিতর্কিত শক্তিগুলো উসকানিমূলক প্রচারণার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে পারে বলে মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ ইউনিটগুলোকে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ করে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে চালাতে বলা হয়েছে বিশেষ অভিযান। এ সময় সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন, বিমানবন্দরের আশপাশে নজরদারি এবং মোবাইল পেট্রোল বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল, সাইবার পেট্রোলিং এবং গোয়েন্দা নজরদারিও জোরদার করতে বলা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের যুব ও ছাত্র সংগঠনের একাংশ মাঠে সক্রিয় না থাকলেও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ‘স্কোয়াড’ গড়ে তুলেছে। তারা ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল ব্যবহার করে সামাজিক অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে। তিনি দাবি করেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে এনে দেশে রাজনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে।

তার বক্তব্য, “তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। যারা দেশ বা বিদেশে বসে এই ধরনের পরিকল্পনায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৩:৩৫:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
৫১৪ Time View

নৈরাজ্যের শঙ্কা: আওয়ামী লীগের গোপন তৎপরতা নিয়ে পুলিশের অ্যালার্ট

আপডেটের সময় : ০৩:৩৫:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

 

কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগকে ঘিরে হঠাৎই তৎপর হয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশঙ্কা, দলটি নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনায় থাকতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে দেশের বিভিন্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে জরুরি সতর্কবার্তা।

এসবির পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী গোপনে সংগঠিত হয়ে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারে। বিশেষ করে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে অনলাইন-অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারণা চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) এসবির রাজনৈতিক উইং থেকে এই বিশেষ বার্তাটি পাঠানো হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেন এসবির ডিআইজি (রাজনৈতিক)। চিঠিটি ডিএমপি কমিশনার, সিটি এসবি, বিভাগীয় উপ-পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম ও খুলনার স্পেশাল পুলিশ সুপার এবং দেশের সব জেলা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে সরকারবিরোধী দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগঠনগুলো একাধিক কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সময়ে বিতর্কিত শক্তিগুলো উসকানিমূলক প্রচারণার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে পারে বলে মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ ইউনিটগুলোকে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ করে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে চালাতে বলা হয়েছে বিশেষ অভিযান। এ সময় সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন, বিমানবন্দরের আশপাশে নজরদারি এবং মোবাইল পেট্রোল বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল, সাইবার পেট্রোলিং এবং গোয়েন্দা নজরদারিও জোরদার করতে বলা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের যুব ও ছাত্র সংগঠনের একাংশ মাঠে সক্রিয় না থাকলেও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ‘স্কোয়াড’ গড়ে তুলেছে। তারা ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল ব্যবহার করে সামাজিক অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে। তিনি দাবি করেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে এনে দেশে রাজনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে।

তার বক্তব্য, “তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। যারা দেশ বা বিদেশে বসে এই ধরনের পরিকল্পনায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”