নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গতকাল বুধবার বাবার কোলে থাকা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবাও গুলিবিদ্ধ হন।ওই শিশুর নাম জান্নাতুল ফেরদাউস (৩)। তার বাবা আবু জাহের (৩৭) এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জমির মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে গতকাল বিকেলের দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মালকার বাপের দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ জন্য উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রিমনকে (২৫) দায়ী করা হচ্ছে।
বেগমগঞ্জের হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহ আজিম বলেন, রিমন এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
আবু জাহেরের ভাগনে ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ করেন, ‘কয়েক দিন আগে আমাদের বাড়ির আল আমিন নামের এক ব্যক্তির জমিনের মাটি বিক্রি করে সন্ত্রাসী রিমন। মাটির ক্রেতা বাদশা ওই জায়গা থেকে ছয় ফুট মাটি কাটে। এরপর আরো মাটি কাটতে গেলে বাড়ির লোকজন বাধা দেয়। খবর পেয়ে রিমন ও তার সহযোগী রহিম, মহিন, সুজনসহ আরো কয়েকজন গত দুই দিনে একাধিকবার আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি দেয় ও এক নারীকে মারধর করে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ তাঁকে প্রথমে চিকিৎসা দিতে বলে।
মামুন আরো অভিযোগ করেন, মাটি কাটার বিরোধের জের ধরে গতকাল বিকেল ৪টার দিকে রিমনের নেতৃত্বে রহিম, মহিন, সুজনসহ ১০-১৫ জন অস্ত্রধারী মালকার বাপের দোকান এলাকায় তাঁর দোকানে এসে গালাগাল করে। ওই সময় তাঁর মামা জাহের শিশুসন্তান জান্নাতকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসেন। এ সময় রিমন তাঁকেও গালাগাল করে এবং মাটি কাটায় বাধা দেওয়ার জন্য তাঁকে দায়ী করে। একপর্যায়ে রিমন তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে এবং শিশু জান্নাতকে ইট দিয়ে আঘাত করে।
মামুন বলেন, এ ঘটনার পর তাঁর মামা জাহের দোকান থেকে বেরিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলে রিমন ও তার বাহিনীর সদস্যরা পেছন থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে জান্নাতের কানে, মাথায় এবং তাঁর মামার চোখে গুলি লাগে। এলাকাবাসী তাঁদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জান্নাত মারা যায়।
শিশু জান্নাতের বাবা আবু জাহের সৌদি আরবে থাকেন। তাঁর বাবার নাম মৃত জানু সরদার।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।