মোঃজিলহাজ বাবু ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ের দক্ষিণ পাড়ার ওপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হুমকির মুখে পড়েছে পাঁকা নারায়নপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়। ভাঙন থেকে বাঁচতে স্কুলটির সব মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকি মুক্ত রাখতে বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দীন ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দীন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, বুধবার জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পানি উন্নয়ন বোর্ড কে জানালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোখলেছুর রহমান এর নির্দেশে ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান তোসি, ভাইস চেয়ারম্যান তসিকুল আলম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন আক্তার, হেল্প চাঁপাই এর সাধারণ-সম্পাদক জিলহাজ সহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, প্রিন্ট মিডিয়াসহ ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাঁকা নারায়নপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। এ বিদ্যালয়েটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়েনের মধ্যবর্তীস্থান দক্ষিণ পাড়ায় অবস্থিত। আগ্রাসী পদ্মার ভাঙনের কারণে স্কুলটি শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের নিশিপাড়া চরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। দক্ষিণপাড়া থেকে নিশি পাড়ার দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার।
নারায়নপুরের আহাসানুর কবির বাবু বলেন, প্রতি বছরই পদ্মার ভাঙনে আবাদি জমিসহ সরকারি- বেসরকারি স্থাপনা বিলীন হয়। নিঃস্ব হয়েছেন অনেক মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে জিওব্যাগ দিয়ে পদ্মার ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হলে অনেক জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়া থেকে মুক্তি পাবে।
পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা সপন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন নিয়ে পদ্মার তীরবর্তী এলাকা। নদীতে ভাঙন শুরু হলে দুই ইউনিয়নের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পদ্মা পাড়ের মানুষ আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে পাকা বাড়ি করেও, অনেকে থাকতে পারেননি। ওইসব বাড়িও পদ্মায় বিলীন হয়েছে।
পাঁকা নারায়নপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকাররম হোসেন বলেন, পদ্মা নদী ভাঙনের কারণে বিদ্যালয়টি শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নের নিশিপাড়ায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এর আগে কয়েকবার নদী ভাঙনের জন্য বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়েছে। আপাতত পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও বিদ্যালয়ে শিক্ষার কার্যক্রম চালু হবে। এখানে পাঁকা আর নারায়নপুরের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত বলেন, সরজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে স্কুলটি নিশিপাড়া চরে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যালয়টি সরিয়ে না নিলে ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যেত। বহু টাকার সম্পদের ক্ষতি হতো