মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে দেশের অর্থনীতির চেহারা বদলে যাবে।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে, কোনো ঋণ নেওয়া হয়নি। আমরা দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা অর্থনৈতিক সমীক্ষা চালিয়ে বাকি মেগা প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছি। শুধু ঋণের ভিত্তিতে নয়, বিদেশি অংশীদারত্বের মাধ্যমেও অনেক মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্র পরিচালিত বিটিভি এবং বেতারের পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারি মিডিয়া আউটলেটে সম্প্রচারিত জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তার সরকার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য দেশি ও বিদেশি ঋণ নিয়েছে। তবে, আমরা সতর্ক দৃষ্টি রেখেছি যাতে ঋণগুলো বোঝা হয়ে না যায়।
তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ এবং ২০২৩ হবে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলক বছর। কারণ, আর কয়েক মাস পরেই চালু হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু। এই সেতু জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বছরের শেষ নাগাদ নাগাদ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অংশে মেট্রোরেল চালু হবে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আশা করা যায়, মেট্রোরেল রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। আর আগামী অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে কর্ণ ফুলির নদীর তলদেশ দিয়ে চালু হবে দেশের প্রথম টানেল।
তিনি বলেন, এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট আগামী বছরের শেষ নাগাদ চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত মাসে পায়রায় ১,৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্ধারিত সময়ের আগেই উদ্বোধন করা হয়েছে। অন্যান্য মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত ১৩ বছরে যে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে তা অর্থনীতির সামষ্টিক সূচকগুলো বিবেচনা করলেই স্পষ্ট হয়। ২০০৯ সালে জিডিপির আকার ছিল মাত্র ১০২ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে তা ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৭০২ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ২,৫৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ভাবনা এবং দূরদৃষ্টি-সম্পন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বলে তিনি উল্লেখ করেন।