আবির হোসেন সজল, লালমনিরহাটঃ ৭৫ বছর বয়সী আজিমউদ্দিন কিছুদিন আগেও দিনমজুরের কাজ করে সংসার খরচ চালিয়েছেন। বর্তমানে বয়সের ভাড়ে কর্মক্ষমতা হারান। তাই এখন আর তাকে কেউ কাজেও নেয়না। তার পরিবারে রয়েছে তিনজন বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সদস্য। কাজ না পাওয়ায় এবল কেউ কাজে না নেয়ায় তার পরিবারের এই তিন বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সদস্য নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র, অসহায় বৃদ্ধ আজিমুউদ্দিন।
প্রতিবন্ধী সন্তানদের চিকিৎসার জন্য নেই অর্থ। দরিদ্র, অসহায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিও তিনি। তাই এই বয়সে রিক্সা চালিয়ে পরিবারের ৮ জন সদস্যের মধ্যে ৩ জনের চিকিৎসা করার কথা কল্পনাও করতে পারেন না। ছেলে রাজ্জাকের উপার্জনের পাঠানো অর্থে যেখানে চাল, ডাল, তেল আনতে সব খরচ হয়ে যায় সেখানে তাদের চিকিৎসার অর্থ থাকারও কথা নয় তার।
হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের মিলনবাজার পূর্ব সাড়ডুবি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের আজিমউদ্দিন (৭৫)। কিছুদিন আগেও দিনমজুরের কাজ করে সংসারের হাল ধরে রাখলেও বয়সের ভাড়ে কর্মক্ষমতা হারান। তাই এখন কেউ আর তাকে কাজেও নেয়না। এজন্য ৮ সদস্য পরিবারের হাল ধরতে হয় বৃদ্ধ আজিমুউদ্দিনের বড় ছেলে আবদুর রাজ্জাক মিন্টু (৪০)। মিন্টু ঢাকায় ভাড়ায় রিক্সা চালিয়ে সংসার চালায়।
দীর্ঘদিন থেকে মাথার সমস্যায় ভুগছে বৃদ্ধ আজিমুউদ্দিন এর ছোট ছেলে আশরাফুল আলম (৩৪) অপরদিকে বড় ছেলে মিন্টুর ২টি ছেলে সাইফুর রহমান (১৪) জন্ম থেকে সব সময় চিৎকার করে, ঘাড় নাড়ে, মাটিতে গড়াগড়ি করে আর কিছুই খেতে চায় না। আরেক ছেলে রহমত (৬) চোখের সমস্যায় এক দিকে তাকিয়ে থাকে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে কান্না জড়িত কন্ঠে বৃদ্ধ আজিমুউদ্দিন বলেন, “আমাদের বেঁচে থেকে কোন লাভ নেই। এতো কষ্টের চাইতে মরে যাওয়াই অনেক ভালো। অসুস্থ ৩ জনের চিকিৎসা করা তো দূরের কথা, ডাক্তারকে ভিজিট দিব সে টাকাই তো আমার নেই। বড় ছেলে মিন্টু অন্যের রিক্সা ভাড়ায় চালিয়ে সামান্য যে টাকা আয় করে তা দিয়ে সংসারই চলে না। পড়নের কাপড় নেই। এরপরে আমি তাদের চিকিৎসা করব কিভাবে”।
আজিমুউদ্দিন নিজের জন্য কিছু ভাবেন না। তার যত ভাবনা সব বাকি সদস্য ও অসুস্থ ৩ জনকে নিয়ে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানান তার পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য। মৃত্যুর আগে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের মুখে একটু হাসি দেখতে চান এটাই তার শেষ ইচ্ছা।
এ বিষয়ে বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান জানান, ওই পরিবারটিকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কিন্তু পারিবারের ৩ জন সদস্যের চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিত্তবানরা যদি সহযোগিতা করেন তাহলে হয়তো অসহায় পরিবারটির অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসা হবে।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা (আজিমুউদ্দিন) মোবাইল নম্বর :- +৮৮০১৭৮৮১৩৩৬২৩ (বিকাশ পার্সোনাল)।