রংপুর ব্যুরোঃ পদ্মা সেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চলতি বাজেটে অর্থ বরাদ্দের দাবিতে জানিয়েছে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। এ দাবি আদায়ে ৫ মিনিটের ‘স্তব্ধ রংপুর’ কর্মসূচি পালন করেছে সর্বস্তরের মানুষ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টায় স্তব্ধ রংপুর’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সংগ্রাম পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। উদ্বোধনের সময় চলতি বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তায়নে অর্থ বরাদ্দ না দেওয়া হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র বলেন, আমরা তিস্তা নিয়ে টানাটানি দেখতে চাই না। ভারত না চীন কে অর্থ দিবে তা নদীপাড়ের মানুষ বোঝে না। দুই কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ খেলার অধিকার রাখে না। সরকার প্রধান নিজেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবাঢনে প্রতিশ্রুত দিয়েছেন। হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে কিন্তু রংপুর অঞ্চল কোন প্রকল্পই পাচ্ছেনা, এই বৈষম্য দূর করতে হবে। তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, নদী ভাঙ্গন ও বন্যায় প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিজ দেশেই হচ্ছে শরণার্থী। বিলীন হচ্ছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। তিস্তা তীরের মানুষের মুখেমুখে একটাই স্লোগান- তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও, কৃষকের জান বাঁচাও, তিস্তা খননের কাজ শুরু করো, মহাপরিকল্পনার কাজ দ্রুত বাস্তায়ন কর। তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তির অপেক্ষায় মহাপরিকল্পনার কাজ ঝুলিয়ে রাখা যাবেনা। ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মেগা প্রকল্পগুলোতে ৩ লাখ কোটি টাকার কাজ চলছে। সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও রংপুর বিভাগের দুই কোটি মানুষের জন্য ৩৭ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প থাকার কথা ছিল সেটি হয়নি। কোন কোন বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে রংপুর বিভাগের জন্য মাত্র ০. ৯৮ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল বৈষম্য দূরীকরণ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মৃত্যু বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। কিন্তু রংপুরের মানুষ বরাবরই বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। এদিকে বেলা ১১টা বাঁজতেই জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হয় ‘স্তব্ধ রংপুর’ কর্মসূচি। এসময় সড়কের দুপাশসহ যে যেখানে অবস্থান করছিল সেখানেই থমকে দাঁড়ান। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ছাত্র, শ্রমজীবী, কর্মজীবী, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন এই দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নেন।সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছাড়াও অংশগ্রহণে জোরালো হয়ে ওঠে তিস্তা পাড়ের মানুষ বাঁচানোর দাবি।