১৫ ওভার শেষেই পুরো মাঠে একটাই শব্দ শ্রীলঙ্কা, শ্রীলঙ্কা, শ্রীলঙ্কা। দেশের অর্থেনৈতিক খারাপ সময়ের মাঝে ক্রিকেট একটা জাতিকে যেভাবে জাগিয়ে তুলেছে, তাতেই এমন সমর্থন তো দাসুন শানাকাদেরই প্রাপ্য। আর সেই শ্রীলঙ্কা, শ্রীলঙ্কা শব্দের সুরতালের মাঝে পাকিস্তানকে উড়িয়ে ষষ্ঠবারের মতো এশিয়া কাপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরে নিয়েছে লঙ্কানরা। রাজাপক্ষদের শ্রীলঙ্কাই হলো এশিয়ার রাজা।
অথচ টুর্নামেন্টে লঙ্কানদের শুরুটা হয়েছিল বড় হার দিয়ে। আফগানিস্তানের কাছে উড়ে যায় তারা। সেই হারেই বদলে দেয় শানাকাদের। একের পর এক ম্যাচ জিতে ফাইনাল পথ সহজ করে তোলে তারা। ভারত, আফগানিস্তান এমনকি পাকিস্তানকেও হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের ফেবারিট করে তোলেন তারা।
আজ দুবাইতে টুর্নামেন্টের ফাইনালে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ভানুকা রাজাপক্ষের অপরাজিত ৭১ রানে চড়ে ১৭০ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২৩ রানে হেরেছে পাকিস্তান।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই ধীর গতির ব্যাটিং করে পাকিস্তান। পুরো টুর্নামেন্টে ব্যর্থ উদ্বোধনী ব্যাটার বাবর আজম ফেরেন ব্যক্তিগত ৫ রানে। এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে শুরুতেই লঙ্কানদের ব্রেক থ্রু এনে দেন প্রমোদ মাদুশান। নতুন ব্যাটার ফখর জামানকেও বোল্ড করেন এই পেসার।
দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। একপ্রান্তে ধীর গতির ব্যাটিং করেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। অন্যপ্রান্তে ভালো সঙ্গে দিলেও ৩২ রান করা ইফতেখার আহমেদ নিজের তৃতীয় শিকার বানান এই মাদুশান।
১৫ ওভারে তিন উইকেটে ১০১ রান তোলে পাকিস্তান। শেষ ৩০ বলে ৭০ রানের চাপ মাথায় নিয়ে ওই ওভারেই ফেরেন মোহাম্মদ নেওয়াজ (৬)। পরের ওভারে ৫৫ রান করা রিজওয়ানকে ফেরান হাসারাঙ্গা। পাকিস্তানের বেশির ভাগ ব্যাটারই ফেরেন বাউন্ডারিতে ক্যাচবন্দি হয়ে। নিজের শেষ ওভারে নাসিম শাহকে ফিরিয়ে চতুর্থ উইকেট তুলে নেন মাদুশান।
এর আগে বল হাতে ইনিংসের শুরুটা দুর্দান্ত হয় পাকিস্তানের। বিপরীত দৃশ্য লঙ্কান শিবিরে। তৃতীয় বলে শ্রীলঙ্কার সেরা ব্যাটার কুশল মেন্ডিসকে দারুণ এক ইনসুইংয়ে বোল্ড করেন নাসিম শাহ। গোল্ডেন ডাকে ফেরেন কুশল। আরেক ওপেনার পাথুম নিশানকা (৮) থিতু হওয়ার আগেই ফেরান হারিস রউফ।
২৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় লঙ্কানরা। সেটা আরও ক্ষতি এনে দেয় দাশুনকা গুনাথিলাকার ব্যর্থতায়। ৪র্থ উইকেটে ভানুকা রাজাপক্ষের সঙ্গে রান তোলেন তিনে আসা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ২৮ রান করে এই ব্যাটার ফিরলে ভাঙে ১৭ রানের জুটি। ৫৩ রানে চার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়া দলকে সাহস দিতে পারেননি অধিনায়ক দাসুন শানাকাও। ২ রানে ফেরেন তিনি।
৫৮ রানে পাঁচ উইকেট হারানো লঙ্কানদের ম্যাচে ফেরান রাজাপক্ষে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ক্যাচ মিস, ফিল্ডিং মিস ও বোলিংয়ের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসে পাকিস্তান। এরই মধ্যে দলকে সেঞ্চুরি এনে দেয় রাজাপক্ষে-হাসারাঙ্গা জুটি। তাঁদের ৬৮ রানের জুটি ভাঙে হাসারাঙ্গা (৩৬) ফিরলে। তবে এক প্রান্তে দলকে লড়াইয়ের পথ দেখান রাজাপক্ষে। একাই দ্রুততার সঙ্গে রানের গতি এগিয়ে নেন তিনি।