ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় যেন অমাবস্যার চাঁদ। সেই ১৯৯২ বিশ্বকাপ থেকে দীর্ঘ ৩১ বছর পেরিয়ে গেল পাকিস্তান বনাম ভারতের ম্যাচ মানেই যেন ম্যান ইন গ্রিনদের হার। বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে এসে আহমেদাবাদে আজ (শনিবার) পাকিস্তানকে গুড়িয়ে ৭ উইকেট আর ১১৭ বল হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছে ভারত। এ নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় ম্যাচে জিতলো রোহিত শর্মার দল, উঠে গেলো পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর পাকিস্তান পেলো হারের স্বাদ।
পাকিস্তানের দেওয়া ১৯২ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারতীয় টপ অর্ডার। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে অধিনায়ক রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ইনিংসে ২ উইকেট হারিয়ে ৭৯ রান তুলে ভারত। ইনিংসের শুরুতে ওপেনার শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি ফিরে গেলেও এক প্রান্তে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন রোহিত। তৃতীয় উইকেট জুটিতে শ্রেয়াস আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ভারতকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান তিনি।
এবারের বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় শতক থেকে মাত্র ১৪ রান দূরে থেকে শাহিন আফ্রিদির শিকার হন রোহিত। সাজঘরে ফেরার আগে ৬৩ বলে ৮৬ রান করেন তিনি,যেখানে ছিল ৬টি চার ও ৬টি ছয়ের মার। তবে শেষ দিকে অর্ধশতক তুলে দলের জয় নিশ্চিত করেন আইয়ার। ৩১তম ওভারেই ১১৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া। এমন জয়ের ফলে ওয়ানডে বিশ্বকাপে আটবারের দেখাতে আটবারই হারের মুখ দেখেছে পাকিস্তান।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার থেকে দারুণ সূচনা পায় পাকিস্তান। কিন্তু ইনিংসের অষ্টম ওভারে আগের ম্যাচে শতক হাঁকানো আব্দুল্লাহ শফিক মোহাম্মদ সিরাজের বলে লেগ বি ফোরের ফাঁদে পড়েন। দলীয় ৪১ রানের প্রথম উইকেট হারানো পাকিস্তান ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে আর কোন উইকেট না হারিয়ে ৪৯ রান তুলে।
তবে ইনিংসের ১৩তম ওভারে আরেক ওপেনার ইমাম উল হককে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান হার্দিক পান্ডিয়া। দলীয় ৭৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো পাকিস্তানকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে পথ দেখান বাবাওর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের ব্যাটে বড় রানের ভীত গড়ে ম্যান ইন গ্রিনরা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইনিংসের ২৯ ওভারেই দলীয় ১৫০ রান তুলে নেয় পাকিস্তান। নিজের অর্ধশতক তুলে নিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখানো বাবর আজম ৩০তম ওভারে মোহাম্মদ সিরাজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন। দলীয় ১৫৫ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটলে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে যায়।
পাকিস্তান অধিনায়ক ব্যক্তিগত ৫০ রান করে ফিরে গেলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ। ভারতীয় পেসার থেক ধরে স্পিনার যেই বল করেছে সেই বোলারই ৩০ ওভারের পর উইকেটের দেখা পেয়েছেন।
৩৩তম ওভারে কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণিতে সৌদ সাকিল ও ইফতিখার আহমেদ ফিরে গেলে অল্পতেই ঘুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। ৩৪তম ওভারে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান পেসার জাস্প্রিত বুমরাহ।
দলীয় ১৫৫ রানে ২ উইকেট থেকে ১৬৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাবর আজমের দল। শেষদিকে ভারতীয় বোলারদের তোপে ৩৬ রানের ব্যবধানে ৮ উইকেট হারিয়ে ৪২.৫ ওভারে ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ভারতের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন পাঁচ জন বোলার। পাকিস্তানের হয়ে ৫০ রান করেন অধিনায়ক বাবর।