পাবনায় জেঁকে বসেছে শীত। ভোর থেকেই কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে চারপাশ। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই কুয়াশায় দেখা মিলছেনা সুর্যের। ফলে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে জেলার কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করেই কাজে বের হচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে জেলার ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী। কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে।
মধ্যরাত পর্যন্ত যেসব দোকানপাট খোলা থাকে তার অধিকাংশই বন্ধ। চারদিকে নিশ্চুপ-নিরবতা। কোথাও কোনো সাড়াশব্দ নেই। ঘরের চালে বৃষ্টির ফোটার মত শব্দ শুনতে পাচ্ছেন শুধু তারাই যাদের মাথার ওপর রয়েছে কনক্রিটের ছাদের বদলে টিনের চালা।
সুজানগর বাজারের মুদি দোকানী রহমান মিয়া জানান, অন্য সময় রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। সবসময় দোকানে কাস্টমার আসেন। আজ তীব্র শীত আর কুয়াশার পরিমাণ এত বেশী, রাস্তা-ঘাট জনমানব শূন্য। তাই রাত ৯টার আগেই দোকান বন্ধ করে বাসায় অবস্থান করছি।
একই এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ জানান, হাতে কিছু কাজ থাকলেও তীব্র শীত আর কুয়াশার কারণে ঘরের বাইরে থাকার কোনো উপায় নেই। তাই রাত ৮টার আগেই বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের সময় দিচ্ছি।
এদিকে, একই চিত্র ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক সংলগ্ন সাথিয়া উপজেলা কাশিনাথপুর বাজার। মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় দিন-রাত ২৪ ঘন্টা মানুষের আনাগোনা চলতে থাকে। এ বাজারে বেশ কিছু হোটেল, কনফেকশনারী, পানের দোকান, ফলের দোকান সারারাত খোলা থাকলেও বর্তমানের চিত্র একদমই আলাদা। এ যেন অপরিচিত কোনো বাজার। কোনো মিল নেই ক’দিন আগের সঙ্গে।
যে মহাসড়কে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের ব্যস্ততায় গভীর রাত পর্যন্ত মহাসড়ক পার হতে বেশ সময়-সাবধানতা অবলম্বন করতে হতো, সে মহাসড়ক দেখে মন হচ্ছিল যেন হরতাল চলছে। দীর্ঘসময় পরপর চলছে গাড়ী। যাত্রী থাকায় সারারাত বাসস্টান্ড-সড়কগুলোতে রিক্সা-ভ্যান চলাচল করলেও এখনকার চিত্র ভিন্ন।
অপরদিকে, গরম কাপড়ের স্বল্পতায় দুর্ভোগে পড়েছে জেলার নদ-নদীর চরাঞ্চলে বসবাসকারী অতিদরিদ্র মানুষজন। শীতের তীব্রতায় স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে পারছেন না তারা। এছাড়া ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা জমিতে স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর জানান, শীতের তীব্রতায় কোল্ড ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে।