পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাজ্জাদুর রহমানকে ৫০ হাজার দেওয়ার ঘটনার একটি ভিডিও নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড শুরু হয়েছে।
ঘুষ প্রদানকারী গ্রাহকের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী সকল টাকা পরিশোধ করার পরও ঘুষ না দেওয়ায় সংযোগ চালু করেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়েই টাকা দিতে গেলে সেখানে উপস্থিত একজন ব্যক্তি ঘটনার ভিডিও করে ফেলেন। গতকাল শনিবার তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে, পুরো বিষয়টিকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র দাবি করে থানায় অভিযোগ করেছেন ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান।
‘ঘুষ প্রদানকারী’ আমিনুল ইসলাম রানা বলেন, পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর অন্তর্ভুক্ত দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের আওতায় একটি বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আমি বেশ কিছুদিন আগে আবেদন করি। সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম সংযোজনের পরেও নানা অজুহাতে সংযোগ দিচ্ছিল না কর্তৃপক্ষ।
‘ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য এক লাখ টাকা ঘুষ দিলে সংযোগ দেয়া হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। পরে, ৫০ হাজার টাকা জোগাড় গত ১৪ সেপ্টেম্বর বুধবার ডিজিএম সাহেবকে দিতে যাই। তিনি টাকা নিয়ে ড্রয়ারে রাখার সময়, সেখানে উপস্থিত একজন ব্যক্তি টাকার দেয়ার ভিডিও করে ফেললে হাতে নেয়া টাকা ছুড়ে ফেলে দেন ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান।’
ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তিকে চেনেন না বলেও দাবি করেন রানা।
এদিকে, শনিবার এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়।
সংঘবদ্ধ চক্রের ব্ল্যাকমেলের চেষ্টা বলে দাবি করেন পল্লী বিদ্যুতের পাবনা- ১ এর সাজ্জাদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বুধবার সকাল আনুমানিক ১০টায় দাশুড়িয়া পুরাতন ট্রাফিক মোড় এলাকার মো. আনিছুর রহমান ওরফে হামেজ উদ্দিনের ছেলে মো. আমিনুল ইসলাম রানা ৩/৪ জনকে সাথে নিয়ে অফিসে আসে। সেখানে হঠাৎ করেই ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল দিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করে। এ সময় আমি অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ডাকলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।’
সাজ্জাদুর রহমান আরও জানান, আমিনুল ইসলামের বাবা আনিছুর রহমানের নামে দাশুড়িয়া জোনাল অফিসে ৯ লাখ ৩ হাজার ৯৪৮ টাকা বকেয়া থাকায় মামলা চলমান রয়েছে। তাদের বকেয়া টাকা ৯ কিস্তিতে পরিশোধের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর চক্রান্ত করেছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে, বাবার বকেয়া বিলের সঙ্গে নতুন সংযোগের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন রানা। বলেন, ‘ঘুষ নেয়ার ভিডিওর জন্য সমালোচনার মুখে ডিজিএম আবোলতাবোল বকছেন।’
ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ‘ঘুষকাণ্ডের’ বিষয়টি আলোচনায় এলে ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানকে শনিবার দুপুরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর জেনারেল ম্যানেজার আকমল হোসেন।
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।