Saturday , 20 April 2024
শিরোনাম

পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার হুমকি রাশিয়ার

রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের দুই প্রদেশ দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ইউক্রেনীয় বাহিনীর আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা এবং ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর গত ৭ মাসের সামরিক অভিযানে দেশটির যেসব অঞ্চল ইতোমধ্যে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেসব এলাকার দখল ধরে রাখতে প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়া’স সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বুধবার এক বৈঠকে একটি লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সেখানে বলা হয়, ‘(ইউক্রেনে) আমাদের পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই। আমরা দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ ছাড়া যদি দোনেৎস্ক ও লুহানস্কসহ ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে যায়, তাহলেও আমাদের আপত্তি থাকা উচিত নয়’।

‘সম্প্রতি আমরা ইউক্রেনে আরও সেনা পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছি; কিন্তু আমার মতে, কেবল সেনা পাঠানো নয়, (ইউক্রেনের সামরিক অভিযানে) সমরাস্ত্র ব্যবহারের দিকেও আমাদের মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন; এবং দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন, জাপোরিজ্জিয়া প্রদেশসহ আরও যেসব অঞ্চল ইতোমধ্যে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেসব এলাকা ধরে রাখতে হলে প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্যও আমাদের প্রস্তুতি থাকা উচিৎ’।

রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে রাশিয়া’স সিকিউরিটি কাউন্সিলের একটি বৈঠক হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উপপ্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুনভ ও রুশ সেনাবাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। সেখানেই এই লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করেন দিমিত্রি মেদভেদেভ। বৈঠকে উপস্থিতি অন্যান্যরা তার এই প্রস্তাবে সমর্থনও দিয়েছেন।

বৈঠকের একটি সূত্র স্পুটনিককে জানিয়েছে, এখন মেদভেদেভের এই প্রস্তাবটি রাশিয়ার আইনসভার নিম্নকক্ষ দুমা ও উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলে তোলা হবে এবং আইনপ্রণেতাদের ভোট চাওয়া হবে। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন, সেক্ষেত্রে ইউক্রেন অভিযানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যাবহারে আর কোনো প্রশাসনিক বাধা থাকবে না রুশ বাহিনীর সামনে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অত্যন্ত বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত দিমিত্রি মেদভেদেভ ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মূলত পুতিনের নির্দেশেই ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন মেদভেদেভ। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আর অংশ নেননি তিনি। প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দেওয়ার পর মেদভেদেভকে রাশিয়ার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়া’স সিকিউরিটি কাউন্সিলের উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন পুতিন। পদাধিকার বলে এই কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে আছেন পুতিন, কিন্তু তিনি আলঙ্করিক প্রধান, প্রকৃতপক্ষে মেদভেদেভই রাশিয়ার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদের শীর্ষ নির্বাহী।

মেদভেদেভ যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সেসময় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশসূহের প্রতি উদার মনোভাবের জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি। তবে সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রধান হওয়ার পর তার সেই মনোভাবে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। পশ্চিমের প্রতি বিরোধিতায় বর্তমানে পুতিনের চেয়েও কট্টর মেদভেদেভ।

Check Also

ওমরাহ থেকে ফেরার সময় নির্ধারণ করে দিল সৌদি আরব

হজ শুরুর আগে যারা ওমরাহ পালন করতে গিয়েছেন তাদের ফিরে যাওয়ার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x