শুরুতে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিল আর্জেন্টিনা। নিজেদের রক্ষণভাগটা দারুণ সামলে ছিল তারা। গোলরক্ষক এমিলিয়েনু মার্তিনেজ তাই অলস সময় কাটান প্রথমার্ধে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধেই পালটে যায় হিসেব নিকেশ। ৯ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে এগিয়ে যায় সৌদি আরব। তারপর কত আক্রমণ, কত সুযোগ পেয়েও আর সোনার হরিণ খ্যাত গোলের দেখা পায়নি লিওনেল মেসির দল। ফলে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই লিওনেল স্কালোনির দল শিকার হয় অঘটনের।
পুরো ম্যাচজুড়ে বলের দখল নিজেদের পায়ে রেখেছিল আর্জেন্টিনা। ৭০ শতাংশ সময় মেসিদের পায়ে ছিল বল। তবুও ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতে শেষ হাসিটা সৌদি আরবেরই হয়।
অথচ লুসাইলে কিক অফের বাঁশি বেঁজে উঠার পর শুরুতেই পেনাল্টি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তাতে মেসির দেওয়া গোলে এগিয়ে যায় আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। ম্যাচের ১০ মিনিটেই এক গোলে এগিয়ে জয়ের ইঙ্গিতই দিচ্ছিল তারা। সঙ্গে একের পর এক গোল। যদিও সেসব গোল যোগ হয়েছে বাতিলের খাতায়।
বলের দখল শুরু থেকেই আর্জেন্টিনার। একের পর এক আক্রমণ আর পালটা আক্রমণে নাস্তানাবুদ করে তুলেছিলেন সৌদি আরবের রক্ষণভাগকে। খেলার ২৯ মিনিটের সময় তেমনি ক্লান্ত আরব রক্ষণভাহে আক্রমণে যায় আর্জেন্টাইনরা। মেসির বাড়িয়ে দেওয়া বলে এগিয়ে যান লাউতেরা মার্টিনেজ। তার গোলে উল্লাসে মেতে উঠে আকাশী-নীল জার্সিধারিরা। কিন্তু পরমুহূর্তে ভিএআর চেক জানায় অফসাইডের কারণে বাতিল গোলটি।
উল্লাসের জায়গায় তখন জায়গা করে নেয় হতাশা। প্রথমার্ধে এর আগে মেসিরও একটি গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। এভাবে ৪-০ গোলে এগিয়ে থাকার কথা থাকলেও ১-০ তেই সন্তষ্ট থাকতে হয় মেসিদের। কারণ অফসাইডে তিনটি গোল বাতিল করেছেন রেফারি।
যদিও ম্যাচের ১০ মিনিটের সময় এগিয়ে আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি শটে মেসির দেওয়া গোলে লিড পেয়েছিল তারা। খেলার ২২ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পান তিনি। বল জালে জড়িয়েওছিলেন। কিন্তু রেফারি অফসাইডের পতাকা উঁচিয়ে ধরলে বাতিল হয় গোলটি। ২৯ মিনিট পর মার্টিনেজের গোলটিও বাতিল হয় একই কারণে। পাঁচ মিনিট পর একই কারণে ফের মার্টিনেজের আরও একটি গোল বাতিল হয়।
প্রথমার্ধে সৌদি আরবে প্রান্তে ৭ বার আক্রমণ চালায়। যার দুটি আবার গোল বার লক্ষ্য করে। কিন্তু এসময় তারা অফসাইড করেছে মোট ৭ বার। যার মধ্যে তিনবার তারা গোলের দেখা পেয়েছিল। কিন্তু সবগুলোই হয়েছে বাতিল।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরুর পর সময় ৪৮ মিনিটে গড়ালে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে গেলেন আল বুরকাইন। এগিয়ে দেন সামনের দিকে, সেটা পায়ে নিয়ে দ্রুত বল জালে জড়ান সালেহ আল শেহরি। অবিশ্বাস্য সেই গোলেই সমতায় ফেরে সৌদি আরব।
তবে চমক তখনও শেষ হয়নি। ৫ মিনিট পর সালিম আল দাওয়াসারি ফের আর্জেন্টিনার জালে বল জড়ান। তাতেই এগিয়ে যায় সৌদি আরব।
টানা ৩৬ বছর ধরে বিশ্বকাপ জিততে না পারা আর্জেন্টিনা টুর্নামেন্টে এসেছিল ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই ডিফেন্সের এমন হাল হতবাক করেছে সমর্থকদের।সূত্রঃ দেশ রূপান্তর