প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে গঠন করা হয়েছে ‘তামাকবিরোধী সংসদীয় নারী ফোরাম’। সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য শবনম জাহান শিলাকে এ ফোরামের আহ্বায়ক করা হয়। সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে সোনারগাঁও হোটেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নারী মৈত্রীর আয়োজনে নারী সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে ‘তামাকবিরোধী সংসদীয় নারী ফোরাম গঠন’ বিষয়ক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৩ সদস্য বিশিষ্ট ফোরাম গঠন করা হয়। নারী সংসদ সদস্যদের এ ফোরামের অন্যন্য সদস্যরা হলেন- মাহফুজা সুলতানা, জারা জাবিন মাহবুব, পারভীন জামান, শেখ আনার কলি পুতুল, সানজিদা খানম, মাসুদা সিদ্দিক রোজী, ফরিদা ইয়ছমীন, নাজমা আকতার, লাইলা পারভীন, আশরাফুন্নেছা, হাসিনা বারি চৌধুরী এবং অনিমা মুক্তি গোমেজ।
উন্নয়নকর্মী, কথাসাহিত্যিক ও কলামিস্ট স্বপ্না রেজার সঞ্চালনায় সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর সাবেক সচিব মুস্তাফিজুর রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, ‘‘ফোরাম গঠনের পর থেকে সংসদ সদস্যবৃন্দ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছেন। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর যে ঘোষণা, তা বাস্তবায়নে সংসদ সদস্যরা কাজ করছে এবং সামনের দিনগুলোতে একত্রে আরও নতুন উদ্যমে কাজ করবে।’’
নবগঠিত তামাক বিরোধী সংসদীয় নারী ফোরাম এর আহবায়ক এমপি শবনম জাহান শীলা বলেন, ‘নারী স্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক ধোঁয়াবিহীন তামাক। নারীদের মধ্যে বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠী তামাকের কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শুধু তাই নয়, পাবলিক প্লেসে ধূমপানের কারণে অধূমপায়ী নারী ও শিশুরাও মারাত্মক স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে সবাইকে রক্ষার জন্য দ্রুত বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির সংশোধনী পাস করতে হবে। কেননা, যত দ্রুত আইন পাস হবে, তত বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। এই অগ্রগতি ধরে রাখতে ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
প্রধান আলোচক ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর লিড পলিসি এডভাইজর মুস্তাফিজুর রহমান বলেন , প্রতিদিন ৪২২ জন মানুষ প্রান হারান তামাক ব্যবহারের কারনে। এই মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে আমাদের তামাকের ব্যবহার নিয়ে সচেতন হতে হবে। পরোক্ষ ধূমপান এবং ধোঁয়াবিহীন তামাকের হাত থেকে আমাদের নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে হবে। তামাকের ভয়াল ছোবলের মুখে রয়েছে তরুন প্রজন্ম। তরুণদের জন্য ভয়াবহ ই-সিগারেট নিয়েও আমাদের সচেতন হতে হবে।তামাক কোম্পানি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নানান রকম প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে তরুণ সমাজকে আকৃষ্ট করে থাকে। এই বিষয়ে আমাদের হতে হবে যথেষ্ট সচেতন। একত্রে সকলের সমন্বয়ে একদিন আমরা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন করতে পারব।’
এ ছাড়াও নবগঠিত ফোরামের নারী সাংসদরা তাদের বক্তব্যে ফোরামের ভবিষত পরিকল্পনার নানাদিক নিয়েও আলোচনা করেন।