যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বৃহস্পতিবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
নাটকীয়ভাবে মন্ত্রিসভার সদস্য ও বেশিরভাগ কনজারভেটিভ আইন প্রণেতাদের সমর্থন হারানোর পর প্রথমে দলীয় পদ এবং পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন তিনি।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
মন্ত্রিসভার ৫০ জনেরও বেশি সদস্যের পদত্যাগ এবং আইন প্রণেতাদের দাবির মুখে জনসন বলেছেন, এটি স্পষ্ট যে তার দল অন্য কাউকে দায়িত্ব দিতে চায়।
জনসন তার ডাউনিং স্ট্রিট অফিসের বাইরে বলেন, ‘আমি জানি এমন অনেক লোক আছেন, যারা এতে স্বস্তি পাবেন। হয়তো বেশ কয়েকজন হতাশও হবেন। আমি আপনাদের জানতে চাই, বিশ্বের সেরা কাজটি ছেড়ে দিয়ে আমি কতটা দুঃখিত।’
সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গত ২ দিনে মন্ত্রিসভার ৫০ জনেরও বেশি সদস্য পদত্যাগ করায় দল থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ও ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েন বরিস। ফলে পরিণতি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
যদিও বুধবার পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে রাজি হচ্ছিলেন না জনসন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, তার দেশ যেসব অতি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে, সেগুলো নিয়ে তিনি কাজ চালিয়ে যেতে চান। এ ছাড়া, আগাম নির্বাচন দেওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও বুধবার উল্লেখ করেন তিনি।
পরে বৃহস্পতিবার বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রী ও দলের নেতার পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
মঙ্গলবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন জনসন সরকারের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। তাদের পদত্যাগের ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনসনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একের পর এক মন্ত্রী পদত্যাগ করতে শুরু করেন। এখন পর্যন্ত সরকারের নানা পর্যায়ের ৫০ জনেরও বেশি পদত্যাগ করেছেন।
তারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক কিছু কেলেঙ্কারির ঘটনায় বরিস জনসনের প্রশাসন কলঙ্কিত হয়েছে এবং এ পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে সরকারের সঙ্গে থাকা সম্ভব হবে না।
গত কয়েক মাসে বরিসের নেতৃত্বে বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্ত ও কেলেঙ্কারির ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে। ফলে দল ও দেশের নেতা হিসেবে তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ সময় পুলিশ তাকে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ না মানার জন্য জরিমানা করে এবং ডাউনিং স্ট্রিটের (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) কর্মকর্তাদের নীতিমালা বহির্ভূত আচরণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।