ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে অনেক সময় হয়রানির অভিযোগ উঠছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রয়োজন হলে আইনের বিধি সংযুক্ত বা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে এ সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা আছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
রবিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আরবিট্রেশন আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনার শেষে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাভারে কর্মরত সংবাদমাধ্যমটির নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের কোনো গণমাধ্যম বা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করেনি, মামলা হয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অপরাধের বিরুদ্ধে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বিশ্বের সব দেশে আছে। কিন্তু সেখানে হয়তো সরাসরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বলা নেই। ডিজিটাল অপরাধ কমাতে এ আইন করেছে সব দেশ।
আনিসুল হক বলেন, আমাদের এখানে অনেক সময় এই আইনের (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) মাধ্যমে হয়রানির অভিযোগ এসেছে। প্রয়োজন হলে আইনের বিধি সংযুক্ত করা বা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রয়োজনীয়তা আছে। ১৪ মার্চ এ বিষয়ে সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে।
দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদকের আগাম জামিন শুনানিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না, বলা ঠিকও হবে না।
তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে বা জাতিসংঘে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু অপব্যবহার হয়েছিল, সেটা আমরা স্বীকার করে এ বিষয়ে কী পরিবর্তন আনা যায় সেটা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনা এখনও চলমান আছে। সেখান থেকে একটা টেকনিক্যাল নোট এসেছে, আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের যাতে অহেতুক হয়রানি করা না হয়, সে বিষয়ে একটি পদ্ধতি গ্রহণ করা (উদ্যোগ নেয়া) হয়েছে। সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। এ বিষয়ে ৩০ মার্চ আবারও বসার কথা ছিল, তবে তা স্থগিত করা হয়। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় বসা হবে। সুধীজনরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ডেটা প্রোটেকশন আইন এবং এনজিও ভলেন্টারি নিয়েও একটি আইনের কথা বলেছেন। এসব নিয়েও আলোচনা হবে।
২৬ মার্চ প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে শেয়ারের সময় ‘গ্রাফিক কার্ড’ প্রকাশ করা হয়। সেখানে উদ্ধৃতিদাতা হিসেবে জাকির হোসেন নামে একজন দিনমজুরের নাম থাকলেও ছবি ছিল এক শিশুর। কিছুক্ষণ সময় পর উদ্ধৃতিদাতা ও ছবির অসঙ্গতির বিষয়টি সংশোধন করে আবার অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। সেই সঙ্গে মূল প্রতিবেদনের শিরোনামও সংশোধন করা হয়।
এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে প্রথমটির বাদি ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ গোলাম মো. কিবরিয়া। অপরটির বাদি আইনজীবী আবদুল মালেক, যিনি বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি।