রনবীর রায় রাজ, ফুলবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি।। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে পোঁকার আক্রমণে বাদাম ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি দেখা দেওয়ায় চরম ভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। বাদাম ক্ষেতে পোঁকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা মরছে না।
জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরগোরকমন্ডল এলাকার চরাঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক পরিমানে বাদাম চাষ করছেন। বাদাম ক্ষেতের কাছে গিয়ে আক্রান্ত বাদাম ক্ষেত দেখলে মনটা খারাপ হয়ে যায় কৃষকদের।
কৃষকরা জানান, বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণে প্রতিটি বাদাম গাছের কচি কচি মগডাল ও পাতায় পচন ধরে মরে যাচ্ছে। চোখের সামনে বিঘার পর বিঘা বাদামের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা । চরাঞ্চলের কৃষকরা ফসল রক্ষার্থে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে কীটনাশক প্রয়োগ, নিড়ানী ও সার ব্যবহার করছেন।
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল এলাকার বাদাম চাষি হানিফ মিয়া, রসুল মিয়া, আকবর আলী ও চান্দু মিয়া জানান, প্রতি বছরের মত এবারও বাদাম চাষে হাঁড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। প্রতি বছর বাদামের ফলনও ভালো হয়। বিঘা প্রতি ৮/৯ মণ বাদাম উৎপাদন করেন। প্রতি মণ বাদামের মুল্যও ভালো পান তারা।
তারা বলেন, কিন্তু গত ১৫ থেকে ২০ দিন থেকে আমাদের বাদাম ক্ষেতে বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণে কচি কচি মগডাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করছি এখন পর্যন্ত মগডাল ও পাতায় পচন বন্ধ হচ্ছে না। আমরা খুবই চিন্তিত ফসল নিয়ে। তারা ফসল রক্ষার্থে কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
একই এলাকার বাদাম চাষি লাভলু মিয়া বলেন, চার বিঘা জমিতে বাদাম রোপণ করেছি। অন্যান্য ফসল পাট, ভুট্রার চেয়ে পরিশ্রম ও খরচ কম। এ জন্য আমাদের চরাঞ্চলের অনেক কৃষক বাদাম চাষে বেশ আগ্রহী হচ্ছে। এ বছর আমার চার বিঘা জমির বাদাম ক্ষেতে পোঁকার আক্রমণে মগডাল গুলো ঝরে যাচ্ছে। প্রতিটি বাদাম গাছের মগডালে বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণ করছে। অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি তার ফসল রক্ষার্থে কীটনাশক ঔষধ দিচ্ছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা: নিলুফা ইয়াসমিন জানান, এ বছর মোট ৭ হেক্টর জমিতে কৃষকরা বাদামের চাষবাদ করেছে। তিনি আরও জানান, সব এলাকায় আমাদের সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কাজ করছেন। চরগোরকমন্ডল এলাকার বাদাম চাষিরা আমাদের কৃষি অফিসের কাউকে জানায়নি। তিনি জানান, যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের কৃষকরা বাদাম চাষে লাভবান হবেন চাষিরা।