‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জাতিসংঘ পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে’
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা ও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, জাতিসংঘ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের পূর্ণ সমর্থন করছে। দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন লুইস।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকের বিষয়বস্তু জানিয়ে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ ও অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রশংসা করেন লুইস।
ইউনূস ও লুইস বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার এবং সংস্কার কর্মসূচি নিয়েও বিস্তৃত আলোচনা করেন।
গত বছরের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসন অবসানের পর দেশের হাল ধরা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।
সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনে দাবি জানায় বিএনপিসহ কয়েকটি দল।
নানা ঘটনাপ্রবাহে গত ৫ অগাস্ট প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন।
প্রধান উপদেষ্টার এ ঘোষণাকে বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি সরাসরি বিরোধিতা না করলেও নির্বাচনের আগে সংস্কারের দাবি তুলেছে। নতুন সংবিধান লিখতে এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচন দাবি করছে।
আলোচনার মূল বিষয় ছিল আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়ক ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে সংস্থাটির চলমান সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাৎকালে তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘ কীভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করেন।
দুই পক্ষই সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কার উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘের সম্প্রসারিত সহায়তার উপায় খুঁজে দেখেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন সভা এবং এই মাসের শেষ দিকে রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতিও পর্যালোচনা করা হয়। উভয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা তহবিলের ঘাটতি মোকাবিলা এবং রোহিঙ্গা জনগণের জন্য টেকসই আন্তর্জাতিক সংহতি ও বাড়তি সমর্থনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
লুইস বাংলাদেশের সংস্কার ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি জাতিসংঘের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দেশের টেকসই উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধি অর্জনে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।