আজ মঙ্গলবার, ২৬,জুলাই,২০২২ খ্রি. তারিখে মুজিব শতবর্ষ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র ১০২তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত বর্ষকালব্যপী জুম ওয়েবিনারে এক বিশেষ সেমিনারের ৩৫৬তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, বিটিভির সাবেক ডিডিজি এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ড’র পরিচালক বাহার উদ্দিন খেলন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, ইন্টারন্যাশনাল রবীন্দ্র রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা আক্তার, নীলফামারীর জলঢাকা থেকে পিএইচডি গবেষক ফাতিমা-তুজ-জোহরা ও পিএইচডি গবেষক মোঃ মাজহারুল আনোয়ার।
সেমিনারে গেস্ট অব অনার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, ইউএন ডিজএ্যাবিলিটিস রাইটস চ্যাম্পিয়ন ও অনারারি প্রফেসর আবদুস সাত্তার দুলাল ও রংপুর মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আর্জিনা খানম এবং মুখ্য আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’র বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এন্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ’র অধীনে পিএইচডি গবেষণারত প্রশান্ত কুমার সরকার।
সভাপতির বক্তৃতায় ড.কলিমউল্লাহ বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুবিবেচক ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিভির সাবেক ডিডিজি এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ড’র পরিচালক বাহার উদ্দিন খেলন বলেন, বঙ্গবন্ধু বহুমাত্রিক গুণে গুণান্বিত একজন মহান ব্যক্তিত্ব। তাঁর মতো বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী হওয়ার সৌভাগ্য পৃথিবীর কোন খুব কম নেতার মধ্যেই দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি ‘মুজিব:একটি জাতির রূপকার’ কাহিনীচিত্র তুলে ধরে সংক্ষেপে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কারাগার জীবন বর্ণনা করেন। তিনি কান চলচ্চিত্র উৎসবের বর্ণিল আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের বিষয়বস্তু নিয়েও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সিনেমাটির কাস্টিং ডিরেক্টর এবং সহকারী পরিচালক হিসেবে বাহাউদ্দিন খেলন আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন এত বৈচিত্র্যময় এবং বর্ণাঢ্য যে তিন ঘন্টার একটি ছবিতে তাঁর সবকিছু তুলে আনা দুষ্কর এবং দুঃসাধ্য। অনেক দেরিতে হলেও বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক নির্মিত হয়েছে ।এটা নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন এত ব্যাপক যে তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেমন,কারাগার জীবন, অর্থনৈতিক জীবন, সামাজিক জীবন, বন্ধুজীবন ইত্যাদি দিকগুলো নিয়ে আলাদা ভাবে চলচ্চিত্র নির্মিত হতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
আব্দুস সাত্তার দুলাল বলেন, জাতীয় নীতি-নির্ধারণীতে জনগণের সর্বক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ‘নো ওয়ান লেফট বিহাইন্ড’ স্লোগানের বাস্তবরূপ লাভ করবে না। জনাব দুলাল, বাজেটে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের বরাদ্দতালিকায় প্রতিবন্ধীদের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই।যদিও জাতীয় উন্নয়নে প্রতিবন্ধীগণ অবদান রাখছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন এবং এমডিজি লক্ষ্য অর্জনের স্বার্থে প্রতিবন্ধীদেরকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গবেষক প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন,বঙ্গবন্ধু উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন।
আর্জিনা খানম বলেন, বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে সেমিনার কিংবা আলোচনা সভা এক বছরে শেষ করা যাবে না। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং প্রাত্যহিক চর্চার বিষয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই ধারাবাহিক সেমিনার আরো দীর্ঘায়িত করার জন্য জানিপপ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
গবেষক ফারহানা আক্তার বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন থেকেই শিক্ষা দর্শন উৎসারিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ৩৬ হাজার ১১৫ টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করেছিলেন এবং নতুন ১১ হাজার প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলুকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেছিলেন।
গবেষক মো: মাজহারুল আনোয়ার,পল্লী উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরেন।
ফাতিমা-তুজ- জোহরা বলেন, সব কিছুর সমাধানের জন্য যদি দেশের প্রধান নির্বাহী বা প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে হয় তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরগুলোর কর্মতৎপরতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও এর দায় এড়াতে পারে না বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র সহযোগী অধ্যাপক,বিভাগীয় প্রধান ও ডেইলি প্রেসওয়াচ সম্পাদক দিপু সিদ্দিকী। সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে সংযুক্ত ছিলেন রাজশাহী থেকে ড. মাহবুবুল হক ।