তরুণদের নেতৃত্বে নতুন শুরুর আশা ছিল বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টির ধারাবাহিক ব্যর্থতা কাটাতে বিশ্বকাপের আগে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নও বুনেছিল কেউ কেউ। কিন্তু সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৭ রানের হারের পর সেই আশা অনেকটাই মিইয়ে গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মোসাদ্দেক সৈকতের স্পিন ভেলকিতে আশা বাঁচিয়ে রাখে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ১০ রানের হারে সিরিজ হাতছাড়া বাংলাদেশের।
দশমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু ১৫৭ রানের সেই টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ওপেনিং উইকেট জুটির ব্যর্থতার পর টপ অর্ডারেও সেই একই চিত্র। রান তাড়ায় আবারও দিশাহীন বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। মাঝে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে আফিফ হোসেনের ৩০ বলে ৩৯ রানের পর শেষ দিকে এসে মেহেদী হাসান ও আফিফের ২৪ বলে ৩৪ রানের জুটি ছাড়া সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি কোনো জুটি।
শেষ ১৪ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। ক্রিজে থাকা আফিফের দিকে তাকিয়ে ছিল লাল-সবুজের সমর্থকরা। কিন্তু দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে নাসুমের ক্যাচ মিস করলেও তাতে উদযাপনে এতটুকুন ভাটা পড়েনি। প্রথম সিরিজ জয়ের উল্লাসে মাতে স্বাগতিকরা।
বিপর্যয়ের শুরু লিটন দাসকে দিয়ে। প্রথম ওভারে বেশ সাবলীল ছিলেন এ ব্যাটার। ৪ বলে তুলেছিলেন ৯ রান। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলও বাউন্ডারি ছাড়া করলেন। তবে দ্বিতীয় বলেই কাটা পড়লেন। লিডিং-এজড হয়ে ভিক্টর নিয়াউচিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন বাংলাদেশ ওপেনার। ৬ বলে লিটন করেছেন ১৩ রান।
ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় দলে সুযোগ হয় তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের। ঘরোয়া ক্রিকেটে এরই মধ্যে হার্ডহিটার তকমা পাওয়া ইমন আন্তর্জাতিক অভিষেকে টিকলেন ৬ বল, ২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। তুলে মারতে গিয়ে নিয়াউচির দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন।
ঘরোয়া লিগে দুর্দান্ত পারফর্ম করে দীর্ঘদিন পর দলে ডাক পেয়েছিলেন। তবে ব্যর্থতা যেন পিছু ছাড়ছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ বিজয়। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২৬ এবং দ্বিতীয়টিতে ১৬ রান করার পর আজ করতে পারলেন ১৩ বলে ১৪ রান। মাধেভেরের সাদামাটা একটা ডেলিভারিতে স্টাম্প হারালেন এনামুল হক।
এনামুলের পর নাজমুল হাসান শান্তও থিতু হতে পারলেন না। ২০ বলে ১৬ রান করে শন উইলিয়ামসের বলে সাজঘরে ফিরেছেন এ ব্যাটার।মাহমুদউল্লাহ-মেহেদীরা ক্রিজে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহ মন্থর ব্যাটিংয়ে ২৭ বলে ২৭ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন। এছাড়া রানের খাতা খুলতেই পারেননি অধিনায়ক মোসাদ্দেক সৈকত।
শেষদিকে দলের ভরসা ছিলেন আফিফ-মেহেদী জুটি। দুজনের ২৪ বলে ৩৪ রানের জুটিতে জয়ের দিকেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিয়াউচির বলে সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মেহেদী। এরপর যেন বাংলাদেশের আশার প্রদীপও নিভে যায়।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ব্যাটিংয়ে রায়ান বার্লের ক্যামিওর পর বল হাতে সফল ছিলেন ভিক্টর নিয়াউচি। তার শিকার ৩টি উইকেট। এছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ব্র্যাড ইভান্স এবং লুক জঙ্গুইয়ে।