বাজুসকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়, ফুলেল শুভেচ্ছা, স্মারক উপহার, মুহুর্মুহু করতালিতে উৎসবমুখর পরিবেশে হয়ে গেলো বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন।
রোববার (১৩ মার্চ) দুপুর ১২টায় এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন অফিসার্স ক্লাবে বর্ণিল আয়োজনে এ সম্মেলন শুরু হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাজুসের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. দীলিপ কুমার রায় উপস্থিত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, বাজুস কেন্দ্রীয় সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ করবেন।
ডা. দীলিপ কুমার রায় বলেন, গোল্ড রিফাইনারি হলে দেশে প্রচুর স্বর্ণের কারখানা গড়তে হবে। স্বর্ণের ডিলার কারা হতে পারবেন তার একটি রূপরেখা, কাঠামো থাকবে। আমরা ব্যবসায় সমতা আনতে চাই। স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীদের এগিয়ে নিতে চাই। কেউ একা সুবিধা পাবে তা হবে না। আমরা সেই পরামর্শ বাজুস সভাপতিকে দেব। ব্যবসা করতে হলে সততার মধ্য, আইন বিধি মেনে করতে হবে। আমরা সরকারকে কর, ভ্যাট দিলে দেশে আরও টানেল হবে, পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় সেতু হবে।
সম্মেলনের বিশেষ অতিথি বাজুস কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, বাজুস সভাপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গোল্ড ব্যাংক করবেন। এর মালিকানা বাজুসের সব সদস্যের থাকবে। হাতের কাছে গোল্ড পাবেন। বাজুস সভাপতি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে চান। স্বর্ণ রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে চান।
তিনি বলেন, আমরা নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতা বাড়লে সমস্যা থাকবে না। বাজুস আগামী ১৭, ১৮ ও ১৯ মার্চ ঢাকায় স্বর্ণালংকার প্রদর্শনীর আয়োজন করতে যাচ্ছে। দুবাই, ভারত, কাতার, সিঙ্গাপুর থেকে জুয়েলারি শিল্পে জড়িত ব্যবসায়ীরা আসবেন। মেলায় গিয়ে আপনারা দেখে আসবেন। সুখবর হচ্ছে ডায়মন্ডের হলমার্ক নিয়ে আসছি আমরা।
তিনি বলেন, সুযোগ বার বার আসে না। নীতিমালা মেনে চলবেন৷ তাহলে পুলিশ হয়রানি করবে না।
বাজুস কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর দেশের স্বর্ণব্যবসায়ীদের নয়নমণি। তিনি বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ব্রান্ডিং করতে গোল্ড রিফাইনারি প্রতিষ্ঠা করছেন। যেখান থেকে বৈধ কাগজসহ স্বর্ণ পাব আমরা। আমাদের হাতের তৈরি গহনা বিদেশে রফতানি করতে পারব, যেমন তৈরি পোশাক রফতানি হয়। সামনে আমরা জুয়েলারি মেলা করছি। এতদিন আমাদের স্বর্ণ কেনার বৈধ ডকুমেন্ট ছিল না। তাই হয়রানির শিকার হতে হতো। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আত্মসম্মানবোধ ফেরাতে হলে বাজুসকে এগিয়ে নিতে হবে। বাজুস সদস্য না হলে অ্যাসোসিয়েশনের সুবিধা পাবেন না। সরকারকে ভ্যাট ২ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাবনা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। জুয়েলারি ব্যবসার মূল সমস্যা সব জায়গায় একই। সেগুলো সমাধান করতে সচেষ্ট বাজুস কেন্দ্রীয় সভাপতি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের ডেপুটি ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি বাজুস যশোর শাখার সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ৫০ বছর হয়েছে দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু আমরা ব্যাংক থেকে ঋণ পাই না। দেশে গোল্ড রিফাইনারি হলে বিদেশে স্বর্ণ, স্বর্নালংকার রফতানি হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাজুসকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলে অধিকার আদায় হবে।
বক্তব্য দেন বাজুস চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি সুধীর রঞ্জন বণিক।
লক্ষ্মীপুর জেলা বাজুস সভাপতি হরিহর পাল বলেন, প্রতি উপজেলায় গোল্ড ল্যাব স্থাপন করতে হবে।
খাগড়াছড়ি জেলা বাজুস সভাপতি উজ্জ্বল কুমার ধর বলেন, বাজুসের উপজেলা কমিটি গঠনের জন্য গঠনতন্ত্র দরকার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাজুসের সাধারণ সম্পাদক সুনীল বণিক বলেন, বাজুস কেন্দ্রীয় সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
বক্তব্য দেন বাজুস নোয়াখালী জেলা সভাপতি আবুল হোসেন বুলু, ফেনীর সভাপতি ইসমাইল হোসেন খোকন, চাঁদপুরের সভাপতি মো. মোস্তফা ফুল মিয়া, কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি, রাঙামাটির সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন কুমার ধর, কুমিল্লার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান,
অতিথিদের হাত থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন বাজুস জেলা ও উপজেলা শাখার নেতারা।
সভাপতির বক্তব্যে বাজুস চট্টগ্রামের সভাপতি মৃণাল কান্তি ধর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণ শিল্পের জন্য নীতিমালা দিয়েছেন। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই। গোল্ড রিফাইনারি, গোল্ড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ায় বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প অনেক দূর এগিয়ে যাবে।