২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী একাধিক গাড়ি থাকলে দিতে হবে কার্বন কর। তবে বাজেটে কার্বন কর আরোপের বিষয়টি মোটেই যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ্ ডন।
মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
বারভিডা সভাপতি বলেন, আগামী অর্থবছর থেকে একাধিক গাড়ি থাকলে গুণতে হবে কার্বন কর। তবে অনেকেই বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। যেগুলো পরিবেশবান্ধব। এক্ষেত্রে গ্রাহককে কেন কর দিতে হবে বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ ছাড়া বারভিডা জাপান থেকে সর্বাধিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এবং পরিবেশ বান্ধব গাড়ি আমদানি করে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এসব গাড়ি থেকে কার্বন নিঃসরনের সুযোগ নেই। তাই প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী এসব গাড়ির ব্যবহারকারীদের পরিবেশ সারচার্জ বা কার্বন কর প্রদানের বিষয়টি মোটেই যৌক্তিক নয়। এ বিষয়টিতে সুষ্পষ্ট দিক নির্দেশনা ও পরিষ্কার ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, একাধিক গাড়ি যাদের রয়েছে তাদের ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে কার্বন কর দিতে হবে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ও পরিবেশ দূষণ রোধে ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে আগামী বাজেটে দেশের ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠা শিল্প কারখানাগুলোতে যাতায়াতের নিরাপদ বাহন হিসেবে ব্যবহার করা জিপ গাড়ির সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল বলেও জানান বারভিডা সভাপতি। তিনি বলেন, প্রস্তাব অনুযায়ী সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্ক কমানো হলে এসব গাড়ি আমদানি বৃদ্ধি ও সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হত। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, জ্বালানি ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে আমরা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জপূর্ণ সময় পার করছি। এমন পরিস্থিতিতে দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির আমদানি ও ব্যবহার বৃদ্ধি আমাদেরকে বড় রকমের স্বস্তি দিতে পারে। এ জন্য বৈদ্যুতিক গাড়ির বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
হাবিব উল্লাহ্ ডন বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, চীন, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি ও ব্যবহারে ব্যাপক প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মোটরযানে ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমে আসায় বাংলাদেশেও বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় পরিবেশ সুরক্ষা ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি উৎসাহিত করতে এসব গাড়িকে সব ধরনের শুল্ক-কর হতে অব্যাহতি দেয়া জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বারভিডার মহাপরিচালক শহীদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আসলাম সেরনিয়াবাত, সহ-সভাপতি রিয়াজুর রহমানসহ প্রমুখ।