তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মন্তব্য পাকিস্তানই ভালো ছিল এবং রডের মাথায় জাতীয় পতাকা একই সূত্রে গাঁথা।
তিনি বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের মন্তব্য পাকিস্তানই ভালো ছিল এবং ঢাকায় লাঠি ও রডের মাথায় জাতীয় পতাকা লাগানো একই সূত্রে গাঁথা। তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রতি অশ্রদ্ধা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। দু’টি বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক আছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা করছে, মুন্সিগঞ্জে নিজেদের কর্মীকে নিজেরা মেরেছে। তাদের এখন উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রয়োজনে নিজেদের কর্মীদের নিজেরা মেরে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো। সেটা যদি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের নামে আবারো করার অপচেষ্টা চালায় সেগুলো সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে, জনগণও তাদের প্রতিহত করবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের দায়িত্ব।’
বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের ডাক দিয়ে বিএনপির প্রস্তুতি সভা করার বিষয়ে সাংবাদিকরা আজ বিকেলে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমন্যাশিয়াম হলে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
এর আগে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে হরিজন সম্প্রদায়ের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাঝে সমাজসেবা অধিদপ্তরের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের সময় একটি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে, এটার কোন তদন্ত হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে শতশত মানুষের মধ্যে কেউ একজন মোনাজাত ধরেছে। মুসলমান হিসেবে এখানে যদি কেউ মোনাজাত ধরে আর আমি যদি এখানে মোনাজাত না ধরে দাঁড়িয়ে থাকি তাহলে তো আমাকে বলবে বিধর্মী। সেই জন্য জেলা প্রশাসকও সেখানে মোনাজাত ধরেছেন। মোনাজাতের মধ্যে কে কি বললো, সেটার দায় জেলা প্রশাসকের ওপর বর্তায় বলে আমি মনে করিনা।’
ড. হাছান বলেন, এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসককে একটি শো-কজ নোটিশ দেওয়া বা তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া ও তার বক্তব্য নেওয়া দরকার ছিল। বক্তব্য সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারত। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে একটি মোনাজাত ও কিছু পত্রিকার সংবাদকে উপলক্ষ করে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আমি মনে করি সেটি তড়িগড়ি। এবং যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল মানুষের কথা ভাবেন। একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কথাও তিনি ভাবেন। সেই ভাবনা থেকেই আজকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে হরিজন সম্প্রদায়ের মধ্যে অনুদান দেয়া হচ্ছে। হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সরকার অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেটুকু বাকি আছে সেটিও যত দ্রুত সম্ভব আমরা করে ফেলব।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যুবসমাজকে সংগঠিত করার জন্য, যুবসমাজ যাতে বিপথে পরিচালিত না হয়, মাদকাসক্তি থেকে দূরে থাকে, জঙ্গিবাদসহ নানা ধরণের অপকর্মে যুক্ত না হয়, সেজন্য আমাদের সরকার ক্লাবভিত্তিক খেলাধুলার প্রসারে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার সঠিক সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের কারণেই আমাদের নারী ফুটবল দল আজকে সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের সব খেলোয়াড় একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট থেকে উঠে এসেছে। আজকে তারা দেশের গর্ব।
জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সরওয়ার কামাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান প্রমুখ বক্তব্য দেন। এরপর আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিকেএসপি সম্মেলন কক্ষে প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা এবং মহানগর নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী।