কাজী মোঃ আশিকুর রহমান ,আশুলিয়া প্রতিনিধি : ঢাকা সাভারের বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামসহ নয়জনের বিরুদ্ধে পালাক্রমে ধর্ষণ ও মানবপাচারের অভিযোগে ঢাকার মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন পটুয়াখালী কলাপড়া টিয়াখালী গ্রামের এক যুবতী।
ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকার মুগদা থানার ৪৬/বি-১ উত্তর মানিকনগরের বাসা। সর্বশেষ গত ২৯ মার্চ দুপুরে তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। মামলা নং ১১/২০২২, ধারা: মানবপাচার আইনের ৭/৮/১০/১১/১৪
এদিকে আজ ১৬মে ২০২২ মঙ্গলবার বিতর্কিত এই চেয়ারম্যান সাইফুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের খবর বনগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার কপি ফটোকপি করে বিলি হচ্ছে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে চেয়ারম্যান সাইফুল আত্নগোপনে আছেন বলে তার ঘনিষ্টরা দাবি করেছেন।
বাদির আইনজীবি এডভোকেট জাকির হোসেন হাওলাদার জানান, মানবপাচার ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত।
পিটিশন মামলায় বাদির দাবি, ঘটনার পর তিনি পালিয়ে মুগদা থানায় গিয়ে একাধিকবার অভিযোগ করলেও থানার অফিসার ইনচার্জ জামাল উদ্দিন মীর মামলা না নিয়ে তাকে হয়রানি করেন। থানার এসআই এনামুল ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলেও মামলা রেকর্ড না করায় ওই জোনের সহকারি কমিশনারের (এসি) কাছে গিয়েও প্রতিকার মিলেনি।
বাদির অভিযোগ, বিবাদীরা মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত এবং কালো টাকা উপার্জনকারী, নারী লোভী ও পতিতা ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে মামলার বাদীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ওই এলাকায় একটি বাসায় মদের আসর বসায়। আঙ্গুরী নামের এক নারীর মাধ্যমে তাকে ওই বাসায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক মদ্যপান করানো হয়। পরে সে অচেতন হয়ে পড়লে সাইফুল চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন মিলে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
থানা অভিযোগ না নেওয়ায় গত ১০ এপ্রিল আদালতে পিটিশন মামলা রুজু করা হয়েছে। সাইফুল ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হচ্ছেন, জাভেদ হোসেন পাপন, মোখলেছ, আনিসুর রহমান রতন, জসিম, কবির হোসেন মিরাজ, আলাউদ্দিন, আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরি ও জামাল উদ্দিন মীর। মামলায় ১৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আঙ্গুরি তাকে গৃহপরিচারিকা পরিচয়ে বাসায় রেখে দেহব্যবসা করিয়ে আসছিলেন। সাইফুলসহ অন্যরা তার সঙ্গে নিয়মিত শারিরিক সম্পর্কে জড়াতেন বলেও দাবি করছেন ওই যুবতী।
মামলা আমলে না নেওয়ায় থানার ওসিকে বিবাদি করা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে জোনের এসি ও থানার এসআইকে। তদন্ত সংশ্লিরা জানান, আদালতের নির্দেশ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাদির বক্তব্য নিয়েছেন। আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে। সাভার মডেল থানা পুলিশ জানিয়েছে, সাাইফুলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মাামলার ব্যাপারে পুলিশ অবগত রয়েছে।