আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে রেকর্ডগড়া জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ, আফগানিস্তান অলআউট হয় ১৪৬ রানে। পরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪২৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। ৬৬২ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানরা। বাংলাদেশ জয় পায় ৫৪৬ রানের।
এটিই টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। শুধু তাই নয়, ১৪৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে রানের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৩৪ সালের পর এটাই সবচেয়ে বড়।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই টেস্টটি ছিল প্রতিশোধেরও। দুদলের প্রথম দেখায় বাংলাদেশকে হারিয়েছিল আফগানরা। চার বছর পর তাদের হারিয়ে প্রতিশোধ নিল লিটন দাসের দল। আফগানদের বিপক্ষে এবার ভিন্ন কৌশলে নেমেছিল স্বাগতিকরা। টেস্টে নবীন এই দলটির জন্য সবুজ উইকেট বানিয়েছে বাংলাদেশ।
সেই উইকেটে টস জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলো প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি। প্রথম ইনিংসে শান্ত ও জয়ের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৩৮২ রানের সংগ্রহ পায় স্বাগতিকেরা। শান্তর ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ১৪৬ রান। জয় প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে করেন ১৩৭ বলে ৭৬ রান।
জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা। দুর্দান্ত বল করে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের দ্রুত উইকেট তুলে নেয় টাইগার পেসাররা। এবাদত-শরীফুলদের পেস রাজত্বে যোগ দেন স্পিনাররাও। দুটি করে উইকেট তুলে নেন মিরাজ ও তাইজুল। বাকি উইকেটের মধ্যে এবাদত নেন চারটি ও শরীফুল দুইটি। আফগান ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন আফসার জাজাই। বাংলাদেশ লিড পায় ২৩৬ রান।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসেও শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে সময়োপযোগী এক সেঞ্চুরি। জয় আউট হওয়ার আগে খেলেন ৯৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস। অনেকদিনের সেঞ্চুরি খরা কাটিয়েছেন মুমিনুলও। চার উইকেটে ৪২৫ রান করার পর ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য আফগানদের সামনে ৬৬২ রানের পর্বতসম এক লক্ষ্য দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
৬৬২ রান তাড়ায় নেমে টাইগার পেসারদের তোপে ১১৫ রানে শেষ হয়ে যায় আফগানরা। চতুর্থ দিন দুই উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে শুরু করে আফগানিস্তান। শুরুতেই এবাদতের হাত ধরে আসে দিনের প্রথম সাফল্য। তার লেন্থ বল নাসিরের ব্যাটে লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে। তাতেই আউট আফগান ব্যাটার নাসির জামাল। এবাদতের শুরুর সাফল্যের পর জোড়া আঘাত হানেন শরীফুল। আফসার জাজাইয়ের (৬) পর বহির শাহকে (৭) ফেরান তিনি।
শরীফুলের পর জোড়া আঘাত হানেন তাসকিন। আফগানদের মধ্যে শুধু প্রতিরোধ গড়েছেন রহমত শাহ। ৭৩ বলে ৩০ রান করা এই ব্যাটার তাসকিনের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন। এক ওভার বিরতি দিয়ে করিম জানাতকে ১৮ রানে বোল্ড করেছেন তাসকিন। জহির খান তাসকিনের বলে রিটায়ার্ড হার্ট হলে বাংলাদেশের ৫৪৬ রানের রেকর্ড জয় নিশ্চিত হয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার তাসকিন আহমেদ। শরিফুল ইসলাম ২৮ রানে পান ৩ উইকেট। এবাদত ও মিরাজ একটি করে উইকেট শিকার করেন। উভয় ইনিংসে শতক হাকানো নাজমুল হোসেন শান্ত ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।