শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তারকা ক্রিকেটার কারাবন্দি ইমরান খানের বরাত দিয়ে পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিষ্টার সাইফ জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ও পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে (সংসদে) বিরোধী দল হিসেবে যোগদানের জন্য দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান নেতা ইমরান খান।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে এক সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার সাইফ আরও জানিয়েছেন, ইমরান খানের নির্দেশনা অনুযায়ীই তারা অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
তবে পিটিআইয়ের নেত্রী মাশাল ইউসুফজাই জানিয়েছেন, ২০২২ সালে যেসব রাজনৈতিক দল ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল; তাদের সঙ্গে সরকার গঠন নিয়ে কোনো ধরনের জোট তারা করবেন না। ইমরান খানই এ ব্যাপারে তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে নির্বাচনে কারচুপি ও অন্যান্য আন্দোলনে এসব দলের সঙ্গে যুক্ত হতে বলেছেন ইমরান।
এ ব্যাপারে মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) মাশাল ইউসুফজাই লিখেছেন, এটি (আন্দোলন) ছাড়া, যে দল সরকার পরিবর্তনে জড়িত ছিল এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে ভুলন্ঠিত করেছে, তারা কোনো কিছু বলা এবং সরকার গঠনের সুযোগ পাবে না। আমাদের রাজনীতি ক্ষমতার নয়; মানুষের সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য।
এরমধ্যেই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পুরো পাকিস্তানে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ইমরান খানের পিটিআই। ১৮০টি আসনে জয় পেলেও বাকি আসনগুলোর ফলাফল পাল্টে দিয়ে তাদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা কেড়ে নেয়া হয়েছে বলে দাবি দলটির। এ অবস্থায় এ বিক্ষোভে যোগ দিতে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও আহ্বান জানায় পিটিআই।
এদিকে পাকিস্তানের এবারের জাতীয় নির্বাচনে কোনো দলই পায়নি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। জোট করে সরকার গঠনের আলোচনা চললেও এ জোট কতদিন টিকবে তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। এবার জোট সরকার নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’র জিডিএ প্রধান পীর সৈয়দ সিবগাতুল্লাহ শাহ রুশদী। তার দাবি, জোট সরকার হলেও ৮-১০ মাসের বেশি টিকবে না। এরপর সম্ভবত জরুরি অবস্থা বা সামরিক আইন জারি করা হবে।
অন্যদিকে ব্যাপক আলোচিত এ নির্বাচন বাতিল চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন আলী খান নামের এক নাগরিক। একইসঙ্গে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। যার শুনানি হবে সোমবার (১৯ ফেব্রয়ারি)। এরআগে বৃহস্পতিবার ৫৮টি আসনের ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে নির্বাচন হয়। তবে দলীয় প্রতীক না থাকায় এবারের নির্বাচনে ইমরান খানের মনোনীত ব্যক্তিরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যানারে নির্বাচন করেন। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেও পিটিআই ৯২টি আসনে জয় পায়। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করলও পিটিআইয়ের স্বতন্ত্রদের যে কোনো একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে হবে এবং ওই দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে হবে।
সূত্র: জিও টিভি, দ্য ডন