মেসির যেন তর সইছিল না। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান চলছে। একের পর এক পুরস্কার বিতরণ করা হচ্ছে। সবার শেষে দেওয়া হবে বিশ্বকাপ শিরোপা।
কিন্তু গোল্ডেন বল পুরস্কার নিতে এসেই পাশে বিশ্বকাপ ট্রফিটা দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর। ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে ট্রফিতে এঁকে দিলেন চুমু। গ্যালারিতে উঠল চিৎকার। তারপর গোল্ডেন বল হাতে ফটোসেশনে গেলেন মেসি।
এই মুহূর্তটার জন্য ৩৬ বছর ধরে অপেক্ষা করে আছে আর্জেন্টিনা। আর মেসি? যার বাঁ পায়ের জাদুতে মুগ্ধ ফুটবল দুনিয়া, যাকে আরও আগেই অনেকে সর্বকালের সেরাদের একজন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন, সেই মেসিই কিনা একটা বিশ্বকাপ ছাড়া ক্যারিয়ার শেষ করবেন? প্রকৃতি কি এতটা নির্দয় হতে পারে? অবশ্য বিশ্বকাপ না জিতলেও মেসির ঔজ্জ্বল্য একটুও কমত না, কিন্তু এই শিরোপাই তাকে দিয়ে দিল শ্রেষ্ঠত্ব।
বিশ্বকাপ পেল মহানায়কের ছোঁয়া। মেসি কিংবা আর্জেন্টিনার নয়, আসলে অপেক্ষা ফুরাল বিশ্বকাপের। এত বছর ধরে ছুঁই ছুঁই করে সেটা ছুঁতে পারছিল না আর্জেন্টিনা মহানায়কের হাত। কেন যেন হবে হবে করেও হয়ে উঠছিল না। এবার কাতারে আসার আগে মেসির জন্য জীবন বাজি রাখার ঘোষণা দেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। আজ লুসাইল স্টেডিয়ামে সেটা তারা করে দেখালেন। বিশ্বকাপ শিরোপা উঠল মেসির হাতে।
পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা মেসি ছিলেন আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তোলার নায়ক। ফ্রান্সের বিপক্ষে আজকের ফাইনালে তিনি হয়ে উঠলেন মহানায়ক। করেছেন জোড়া গোল। টাইব্রেকারেও করেছেন একটি। ম্যাচ শেষে অশ্রু ঝরল মেসিদের চোখে। তবে এই অশ্রু স্বপ্নভঙ্গের নয়, আনন্দের। বারবার স্বপ্নভঙ্গের পর প্রাপ্তির আনন্দে কাঁদছিলেন মেসিরা। লুসাইল স্টেডিয়ামের গ্যালারি গর্জে উঠেছিল। দর্শকদের অনেকে কাঁদছিলেন। এ সবই মহানায়কের জন্য।