করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছরে যত মৃত্যু ঘটেছে, তার চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে পরিবেশ দুষণজনিত কারণে। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত হওয়া জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ইতোমধ্যে দূষণমুক্ত পরিবেশকে মৌলিক মানবাধিকারের অন্তর্ভূক্ত করেছে। আগামী মাসে পরিষদের সভায় এই প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে। মঙ্গলবার তার খসড়া প্রকাশিত হয়েছে মানবাধিকার পরিষদের ওয়েবাসিইটে।
সেখানে বলা হয়েছে—কীটনাশক, প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক ও রাসায়নিক দুষণের কারণে গত দুই বছরে বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯০ লাখ মানুষ, অন্যদিকে একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫৯ লাখ মানুষের।
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে প্রতিবেদনে; বলা হয়েছে, ‘পরিবেশ দূষণ ও বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সদস্য রাষ্ট্রসমূহ যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেসব যে ব্যার্থ— তা ইতোমধ্যে স্পষ্ট; এবং এই ব্যার্থতার কারণেই বিশ্ববাসীর একটি পরিষ্কার, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই পরিবেশ পাওয়ার অধিকারের লঙ্ঘণ ঘটেছে ব্যাপকমাত্রায়।’
প্রতিবেদনে পলিথিন, নন-স্টিক হাঁড়ি-পাতিল ও সহজে নষ্ট না হওয়া রাসায়নিক দ্রব্য বিশ্বজুড়ে নিষিদ্ধ ঘোষনার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে—এসব উপাদান মানবদেহে ক্যান্সারের পরিবেশ তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বিশ্বের দুষণযুক্ত এলাকাগুলোতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে; আর যেসব এলাকার অবস্থা খুবই গুরুতর—সেসব এলাকার দরিদ্র, প্রান্তিক ও আদিবাসী লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরের সুপারিশও করা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, যেসব এলাকায় পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে—বর্তমান বিশ্বে সেসব এলাকা সবচেয়ে দুষিত অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান দূত মিশেলে ব্যাশেলেট ইতোমধ্যে পরিবেশ দূষণকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুমকি বলে উল্লেখ করেছেন। সূত্র: রয়টার্স