বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী চরম উৎকণ্ঠার কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ক্রমেই জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ংকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। অসময়ে ঝড়-বন্যার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। আর এসব রুখতে এখন মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু হলো বনভূমি। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় বন বা বনভূমির তুলনা চলে না। তাই প্রতিবছরের ২১ মার্চ বিশ্বজুড়ে গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয় বন দিবস।
বন ও বনভূমির নিরাপত্তা রক্ষার্থে ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় ২১ মার্চকে আন্তর্জাতিক বন দিবস ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে সারা বিশ্বে ২১ মার্চ পালন করা হয় আন্তর্জাতিক বন দিবস।
বাংলাদেশেও প্রতিবছর পালিত হয় বন দিবস। বাংলাদেশের বন বিভাগের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বন আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ মোট ভূমির ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। এর আগে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী যা ছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। এই হিসাবে বনের বাইরের গাছ আমলে নেয়া হয়নি।
কিন্তু বন বিভাগের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বনের বাইরে গাছের পরিমাণ মোট ভূমির ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এসব গাছের বেশির ভাগই বেড়ে উঠেছে মূলত সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে। সেই হিসাবে বনের ভেতর ও বাইরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ মোট ভূমির সাড়ে ২২ শতাংশ।
বন আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানুষ এবং বিভিন্ন আদিবাসী সংস্কৃতি তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বনের উপর নির্ভরশীল। প্রাণী এবং পোকামাকড়কে আশ্রয় দেয়া, বাতাসে অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখা, নদীতে মিষ্টি পানি সরবরাহকারী জলাশয়গুলিকে রক্ষা করতে বনের গুরুত্ব অপরিসীম।
গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের মতে, পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বনভূমি। একটি বনে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ গাছ থাকে। একজন মানুষের শ্বাস নিতে বছরে ৭৪০ কেজি অক্সিজেন প্রয়োজন। গড়ে একটি গাছ বছরে ১০০ কেজি পর্যন্ত অক্সিজেন দেয়। ফলে মানুষের বেঁচে থাকা আর পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা একা হাতেই সামলায় বনাঞ্চলগুলো।