ঢাকা , শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেঁচে নেই রাজশাহীতে গর্তে পড়া শিশু সাজিদ

সাংবাদিক

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদ আর বেঁচে নেই। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক জানান, রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হলেও তার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রাত ৯টার দিকেই দীর্ঘ অভিযানের পর শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

বুধবার দুপুরে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে বাড়ির পাশের জমি দিয়ে হাঁটার সময় সাজিদ খড় দিয়ে ঢাকা একটি অরক্ষিত নলকূপের গর্তে পড়ে যায়। তার মা পেছন থেকে ‘মা মা’ চিৎকার শুনে খড় সরিয়ে দেখেন খোলা মুখের সেই গভীর গর্ত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বছর এক ব্যক্তি গভীর নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করে ১২০ ফুট পর্যন্ত খনন করেও পানি না পেয়ে পাইপটি মুখ খোলা অবস্থায় রেখেই ফেলে যান। বৃষ্টিতে গর্ত আরও বড় হয়, কিন্তু কোনো সতর্কতা বা ঢাকনা না থাকায় অবশেষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপরই ভিড় জমে এলাকাবাসীর। গর্তের পাশে রাতজুড়ে অপেক্ষা করেন সাজিদের মা, সন্তানের জন্য অবিরাম কান্না ও দোয়া করতে থাকেন। শুরুতে গর্তের ভেতর থেকে কিছু শব্দ পাওয়া গেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ হয়ে যায়, যা উদ্ধারকর্মীদের আরও উদ্বিগ্ন করে তোলে।

তবে ফায়ার সার্ভিস গর্তে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রাখে। মেডিকেল টিম ও স্থানীয় প্রশাসন পুরো সময় ঘটনাস্থলে অবস্থান করে। সন্ধ্যায় লে. কর্নেল তাজুল জানিয়েছিলেন, শিশুটির জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম; তবুও তাকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৪:৩৬:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
৫২৪ Time View

বেঁচে নেই রাজশাহীতে গর্তে পড়া শিশু সাজিদ

আপডেটের সময় : ০৪:৩৬:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদ আর বেঁচে নেই। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক জানান, রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হলেও তার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রাত ৯টার দিকেই দীর্ঘ অভিযানের পর শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

বুধবার দুপুরে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে বাড়ির পাশের জমি দিয়ে হাঁটার সময় সাজিদ খড় দিয়ে ঢাকা একটি অরক্ষিত নলকূপের গর্তে পড়ে যায়। তার মা পেছন থেকে ‘মা মা’ চিৎকার শুনে খড় সরিয়ে দেখেন খোলা মুখের সেই গভীর গর্ত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বছর এক ব্যক্তি গভীর নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করে ১২০ ফুট পর্যন্ত খনন করেও পানি না পেয়ে পাইপটি মুখ খোলা অবস্থায় রেখেই ফেলে যান। বৃষ্টিতে গর্ত আরও বড় হয়, কিন্তু কোনো সতর্কতা বা ঢাকনা না থাকায় অবশেষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপরই ভিড় জমে এলাকাবাসীর। গর্তের পাশে রাতজুড়ে অপেক্ষা করেন সাজিদের মা, সন্তানের জন্য অবিরাম কান্না ও দোয়া করতে থাকেন। শুরুতে গর্তের ভেতর থেকে কিছু শব্দ পাওয়া গেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ হয়ে যায়, যা উদ্ধারকর্মীদের আরও উদ্বিগ্ন করে তোলে।

তবে ফায়ার সার্ভিস গর্তে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রাখে। মেডিকেল টিম ও স্থানীয় প্রশাসন পুরো সময় ঘটনাস্থলে অবস্থান করে। সন্ধ্যায় লে. কর্নেল তাজুল জানিয়েছিলেন, শিশুটির জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম; তবুও তাকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।