Imam Hossain
ব্লকচেইন -প্রযুক্তির অতীব আধুনিক এই আবিষ্কারের ব্যপারে ভালোভাবে জানেন এমন মানুষের সংখ্যা আমাদের দেশে খুবই কম, কিন্তু সেই ব্লকচেইনের জট ছাড়িয়ে এবার বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর সু্যোগ চার তরুণের সামনে।
গত ২৬শে জুলাই অনুষ্ঠিত জাতীয় ব্লক চেইন অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন হবার মাধ্যমে সিলেট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেট চার বন্ধুর সামনে সুযোগ এসেছে আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার । চার বন্ধুর এই দলের নাম টিম গ্রে ডেভস। দলের দলনেতা- শাহরিয়ার রহমান নাহিদ। অনান্য সদস্যরা হলেন – এস এস সামিউল ইসলাম, ঘাগড়া সালেম দেবনাথ ও কে এম মাইনূরদোজা।
কিন্তু প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ আসলেও এই চার সম্ভাবনাময় তরুণের চোখে হতাশা, কারণ এখনো মেলেনি কোন স্পন্সর বা আর্থিক তহবিল।
ব্লকচেইন হলো এমন একধরনের ডিজিটাল প্রযুক্তি যা মূলত লেনদেন কে সংরক্ষণ করে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে তথ্য পরিবর্তন করা কিংবা মুছে ফেলা সম্ভব না। সহজ কথায়, ব্লকচেইন এমন একটি ডিসেন্ট্রালাইজড ব্যবস্থা যেখানে সবকিছুর রেকর্ড থাকে, কিন্তু কেউই তা পরিবর্তন করতে পারে না। যা একে করে তোলে নিরাপদ এবং বিশ্বস্ত একটি প্রযুক্তি ।কোনো কেন্দ্রীয় অথোরিটি না থাকায় এই প্রযুক্তির স্বচ্ছতা আকাশচুম্বী।
কথা হয় গ্রে ডেভস এর অন্যতম সদস্য মাইনূরের সাথে, তাঁর কন্ঠেও হতাশা স্পষ্ট, তিনি জানান, “ব্লক চেইন টেকনোলজির প্রতি আগ্রহ থেকে আমরা নিজেরা নিজেরা এই বিষয়ে জানার চেষ্টা করি এবং চর্চা শুরু করি, জাতীয় অলিম্পিয়াডের কথা শুনে আশাবাদী হই এবং সেখানে অংশগ্রহণ করি।
জাতীয় পর্যায়ে যখন চ্যাম্পিয়ন হই তখন থেকেই দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবো ভেবে আমরা সকলেই রোমাঞ্চিত ছিলাম কিন্তু এখনও কোন কিছুরই ব্যবস্থা করে উঠতে পারিনি”।
কথা হয় দলনেতা নাহিদের সাথেও, নাহিদের কন্ঠে হতাশাকে ছাপিয়ে শোনা গেল ব্লকচেইনের সম্ভাবনার কথা, নাহিদ বলেন, “দেশে এখন খুব কম মানুষই হয়তো ব্লকচেইন সম্বন্ধে জানে কিন্তু এই ওপেন লেজার সিস্টেম দেশের অর্থপাচার বা দুর্নীতির মত সমস্যা সমাধানেও বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে, আমাদের দলের সবাই যথেষ্ট পরিশ্রমী, আমরা যদি এই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় যেতে পারি তবে অনেক কিছু শেখার সুযোগও পাবো, যা থেকে লাভবান হতে পারে আমাদের দেশ”।
স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে যখন বিভোর পুরো জাতি, সেই সময়ে এই চার তরুণের ব্লক চেইনের বিশ্বকাপে লাল সবুজের পতাকা ওড়ানোর সু্যোগ পাওয়া এক বিশাল অর্জন। কিন্তু ১৫-১৭ নভেম্বর নেদারল্যান্ডে বসতে যাওয়া ব্লকচেইনের বিশ্বকাপে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর সুযোগ পাবেন তো গ্রে ডেভসরা?
কেউ কি এগিয়ে আসবেন না আত্মবিশ্বাসী এই চার তরুণের বিশ্বমঞ্চে দেশের রঙ ছড়ানোর স্বপ্নকে সত্যি করতে?