ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের নাটকীয় উন্নতিতে উত্তর-পূর্ব ভারত সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে। সোমবার নয়াদিল্লির কিরোরি মাল কলেজে ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং জাপানের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের একীকরণ: অর্থনৈতিক বন্ধন এবং পরিবেশগত সংরক্ষণের ভারসাম্য’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, ভারত-বিভাজন উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাকৃতিক সংযোগকে ভেঙে দিয়েছিল। তবে গত এক দশকে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রচেষ্টা ওই এলাকার উন্নয়ন ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন ২০১৫ সালে স্থল সীমানা চুক্তি করি, তখন উভয় দেশের মধ্যে আস্থা ও সম্পর্কের নতুন দিক খুলে যায়। এরপর থেকে সন্ত্রাসবাদ এবং অস্থিতিশীলতা মোকাবিলাসহ অন্য অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান সব রেল ও সড়ক যোগাযোগসহ সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যা তখন বাকি ভারতের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ ছিল এটি ফিরে পাওয়া।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, চট্টগ্রাম ও মোংলার মতো বাংলাদেশের বন্দরগুলোতে ভারতের ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া এ অঞ্চল বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বের বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করেছে। ভৌগোলিকভাবে দেখলে মোংলা বা চট্টগ্রামের মতো বন্দরগুলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রাকৃতিক বন্দর হতো। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে বন্দরগুলোতে আমাদের প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। উত্তর-পূর্বের সঙ্গে উন্মোচিত সম্ভাবনার দিকে তাকালে আমরা দেখি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিশাল উন্নতি। যেখানে অনেক সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে।
জয়শঙ্কর বলেন, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প যা মোদি সরকার বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছেন, তা হলো ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপাক্ষিক মহাসড়ক। এটি ভিয়েতনামের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বকে সংযুক্ত করবে। তিনি বলেন, ভারতের জন্য মিয়ানমার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বেশ কিছু সমস্যা ছিল। এদিকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর গত কয়েক বছরে আরও গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে। সীমান্ত সমস্যা প্রশমিত করার কাজ করছি।
জয়শঙ্কর বলেন, যদি এসব পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হয় এবং উত্তর-পূর্ব মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে পূর্বদিকে যাওয়া যায়, একই সঙ্গে বাংলাদেশের দক্ষিণ দিকে সংযোগ পাওয়া যায় তাহলে ভারতের সমুদ্র তীরসহ সমগ্র পূর্ব ভারত আরও নিবিড়ভাবে বিকশিত হবে, যা মোদি সরকারের উদ্দেশ্য।