ভুয়া সেনা আইডি, প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ ও নারীর সর্বনাশ
সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ধর্ষণ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ফয়সাল আহম্মেদ (৩৪) নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৩ আগস্ট) ভোরে আড়াই হাজার থানার উলুকান্দি পশ্চিমপাড়া এলাকার আলমের বাড়ির দোতলা থেকে তাকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ফয়সাল নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার পাঁচদোনা মেহেরপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি নিজেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভুয়া আইডি কার্ড ব্যবহার করতেন।
প্রেমের ফাঁদে ফেলে নির্যাতন
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, প্রায় এক বছর আগে সিদ্ধিরগঞ্জের বাগমারায় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গেলে ফয়সালের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভুয়া আইডি দেখিয়ে তিনি ওই নারীর বিশ্বাস অর্জন করেন। পরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
গত ৯ আগস্ট ওই নারীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে ময়মনসিংহে নিয়ে গিয়ে ভাড়া বাসায় জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন ফয়সাল। এরপর কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বারবার নির্যাতনের শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীকে।
পুলিশের অভিযান ও উদ্ধার
প্রতারণা টের পেয়ে টাকা ফেরতের দাবি করলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। অবশেষে ভুক্তভোগী কৌশলে ভাইকে ফোনে ঘটনা জানান। পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ভোর রাতে নারীকে উদ্ধার ও ফয়সালকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের সময় প্রতারণায় ব্যবহৃত ভুয়া সেনা আইডি কার্ড, একটি আর্মি ব্যাগপ্যাক, আর্মি রঙের টি-শার্ট এবং ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুরনো প্রতারণার ইতিহাস
পুলিশ জানিয়েছে, ফয়সাল দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীর স্ত্রী ও অসহায় নারীদের টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতেন। এর আগে গোপালগঞ্জের এক স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করা ছাড়াও ময়মনসিংহে প্রবাসীর স্ত্রীকে তালাক করিয়ে ধর্ষণ করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে শাহবাগ ও তুরাগ থানায়ও মামলা রয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি জানান, ফয়সালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।