দুর্দান্ত! অসাধারণ! অনবদ্য! ভয়ডরহীন শ্রীলঙ্কা! এশিয়া কাপের সুপার ফোরে মহাশক্তিধর ভারতকে আজ স্রেফ উড়িয়ে দিল তরুণ অনভিজ্ঞদের নিয়ে গঠিত দলটি! রুদ্ধশ্বাস ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কা জয় পেয়েছে ৬ উইকেটে। শুধু কি শ্রীলঙ্কা জিতল? চরম অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত দেশটির জয়ে আসলে জয় হলো ক্রিকেটের। সুপার ফোরে দুই জয়ে ফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলল শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে টানা দুই পরাজয়ে ভারতের ফাইনালে ওঠার আশা বলতে গেলে শেষ হয়ে গেল!
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রান তাড়ায় নেমে দুর্দান্ত সূচনা করে শ্রীলঙ্কা।
দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা এবং কুসল মেন্ডিস দলকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দেন। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতে আসে ৫৭ রান। ৩৩ বলে ফিফটি তুলে নেন নিশাঙ্কা। অবশ্য তিনি ৩৭ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় ৫২ রানে যুজবেন্দ্র চাহালের শিকার হন। এর সঙ্গেই ১২তম ওভারের প্রথম বলে ৯৭ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। দুই স্পিনার চাহাল আর অশ্বিনের ঘূর্ণিতেই ম্যাচের চিত্র হুট করেই বদলে যায়। ১৩ রানের মাঝে আরও তিন উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
চাহালের শিকার হয়ে চরিথ আসালাঙ্কা ফিরেন ০ রানে। মাত্র ১ রানে দানুশকা গুনাথিলাকাকে ফেরত পাঠান অশ্বিন। ৩৩ বলে ৩ চার ৩ ছক্কায় ফিফটি তুলে নেওয়া কুশলকে ৫৭ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন চাহাল। এমতাবস্থায় জুটি গড়েন ভানুকা রাজাপাক্ষে এবং অধিনায়ক দাসুন শানাকা। দুজনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় শ্রীলঙ্কা। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৭ রানের। বোলার সেই অর্শদীপ সিং। পাকিস্তানের বিপক্ষে পরাজয়ে যাকে ‘ভিলেন’ বানানো হয়েছিল। ম্যাচে ছড়ায় টানটান উত্তেজনা। শেষ দুই বলে দরকার ছিল ২ রান। কিপারের হাতে বল রেখে এবং ওভার থ্রুয়ের সৌজন্যে ১ বল হাতে রেখেই জিতে যায় শ্রীলঙ্কা।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭৩ রান তুলেছিল ভারত। শুরুটা ছিল খুবই বাজে। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান লোকেশ রাহুল (৬)। পরের ওভারেই নেই বিরাট কোহলি (০)। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দলের দায়িত্ব নেন রোহিত। তরুণ সূর্যকুমারকে সাথে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৫৮ বলে ৯৭ রানের ধ্বংসাত্মক জুটি। ক্যারিয়ারের ২৮ নম্বর ফিফটি তুলে নেওয়া রোহিত থামেন ৪১ বলে ৫ চার এবং ৪ ছক্কায় ৭২ রানে।
অন্যদিকে আশা জাগিয়েও বেশিদূর যেতে পারেননি সূর্যকুমার যাদব। ২৯ বলে ১ চার ১ ছক্কায় ৩৪ রান করে শিকার হন দাসুন শানাকার। আর কেউই রুখে দাঁড়াতে পারেননি। হার্দিক পান্ডিয়া (১৭), দিপক হুদা (৩), ঋষভ পন্থ (১৭), ভুবনেশ্বর কুমার (০) রানে আউট হন। শেষে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৭ বলে অপরাজিত ১৫* রানের ক্যামিও না খেললে ভারতের স্কোর অতদূর যেত না। ৩ উইকেট নিয়েছেন মাদুশাঙ্কা, ২টি করে নিয়েছেন চামিকা করুনারত্নে আর দাসুন শানাকা। ১টি নিয়েছেন মহিশ থিকশানা।