দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বন্যা মৌসুমে ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে দ্রুত বন্যার আগাম সতর্কবার্তা প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বন্যার ঝুঁকি মোকাবিলায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার অবকাঠামো টেকসই ও জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দেশের বন্যাপ্রবণ উত্তরাঞ্চলের ৩টি জেলা কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুরের ১৯টি উপজেলায় বিশেষ কার্যক্রম ও প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বন্যা মৌসুমে এ সকল ইউনিয়নে ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে দ্রুত বন্যার আগাম সতর্কবার্তা প্রদান করা হবে, যাতে বন্যা উপদ্রুত এলাকাবাসী তার মোবাইল ফোনে এই তথ্য পেতে পারেন।’
প্রতিমন্ত্রী আজ ঢাকায় একটি হোটেলে আয়োজিত ‘স্থানীয় পর্যায়ে বন্যার সতর্কবার্তা ও প্রচার ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের বার্ষিক অগ্রগতি অবহিতকরণ বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে জনগণ এবং সরকারি বেসরকারি সংস্থা দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতি আরো ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারবে, যাতে বন্যায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস পাবে এবং প্রকল্প এলাকার সকলেই উপকৃত হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান এনডিসি, সম্মানীয় অতিথি এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী সেখ মো. মহসিন এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্র্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আমিরুল হক ভুঁইয়া। এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইফাদসহ বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভৌগলিক অবস্থান ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আমাদের দেশটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে প্রতিরোধ বা নিমূর্ল করা সম্ভব নয়। তাই দুর্যোগ ঝুঁকি কমিয়ে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে জান মালের ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসাই সরকারের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য সামনে রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর দুর্যোগে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসমূলক কর্মসূচির প্রচলন করেছিলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। জাতীয় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। জনসেবায় অবদান রাখার জন্য জাতিসংঘের সম্মানজনক জনসেবা পদক ২০২১ অর্জন করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয়।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে । বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা হতে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়, যা সর্ব সাধারণের কাছে মুজিব কিল্লা নামে পরিচিত । তারই আধুনিক রূপে উপকূলীয় ও বন্যা উপদ্রুত ১৪৮ টি উপজেলায় ৫৫০ টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ,সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান । উপকূলীয় দুর্গত জনগণ যেমন সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে তেমনি তাদের প্রাণিসম্পদকে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারবে ।
এর পূর্বে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জন্য অনলাইন পোর্টাল উদ্বোধন করেন যাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহের তথ্য খুব সহজেই হালনাগাদ করা যাবে।