তাঁবুর শহর নামে পরিচিত মিনা প্রান্তর এখন সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরিধানকারী বিশ্বের নানা বর্ণের, নানা ভাষার মানুষ মুখে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ ধ্বনিতে মুখরিত। আজ বৃহস্পতিবার সারাদিন হাজিরা মিনায় অবস্থান করবেন। মিনা প্রান্তরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়েছে এবারের পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা।
মিনায় যাওয়ার আগে হাজিরা হজের নিয়তে ফরজ ইহরাম পরিধান করেছেন। মক্কায় অবস্থানরত বিদেশিরা নিজ নিজ হোটেল কিংবা মসজিদে হারাম থেকে এবং সৌদি আরবের হজযাত্রীরা নির্দিষ্ট মিকাত থেকে ইহরাম পরিধান করেন। হজ পালনকারীদের জন্য ৮ জিলহজ জোহরের নামাজের আগে মিনায় পৌঁছা সুন্নত। মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও রাতযাপন সুন্নত আমল। এখানে হাজিদের রাত কাটানোর জন্য আলাদা আলাদা তাঁবু রয়েছে। প্রত্যেক তাঁবুর আলাদা নম্বর দেওয়া। তাঁবুর সবই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এখানে হাজিদের এজেন্সির পক্ষ থেকে খাবার পরিবেশন করা হবে। মিনার তাঁবুগুলো সারা বছর গুটিয়ে রাখা হয়, তবে ওই সময় সেখানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ। মক্কা থেকে আরাফার ময়দানের দিকে যাওয়ার মহাসড়কের পাশে মিনার অবস্থান। পবিত্র কাবা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিনা প্রান্তরের আয়তন প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার।
হজযাত্রীরা কেউ বাসে, কেউ হেঁটে বা অন্য যানবাহনে মিনায় এসে পৌঁছেছেন। আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মক্কার সব পথ এখন মিশে গেছে মিনার দিকে। মিনায় জোহর, আসর, মাগরিব, এশা এবং শুক্রবার ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফার ময়দানে যাবেন হাজিরা। আরাফার ময়দানে অবস্থান করা হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। আরাফার ময়দানসংলগ্ন মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেওয়া হয়। তবে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের তাঁবু বেশ খানিকটা দূরে থাকায় তাদের পক্ষে মসজিদে নামিরায় যাওয়া সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে নিজ নিজ তাঁবুতেই তারা নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত ও বিভিন্ন নফল ইবাদত করেন। নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আরাফার ময়দানে অবস্থানই হচ্ছে হজ।’ যে ব্যক্তি আরাফার ময়দানের বাইরে অবস্থান করে চলে আসবে, তার হজ হবে না। এবার শুধু সুস্থ-সবল এবং ৬৫ বছর বয়সী কম ব্যক্তিরাই হজ করার সুযোগ পেয়েছেন।