ন্যায্য পাওনার দাবিতে বিক্ষোভকারী অভিবাসী শ্রমিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে কাতার। বকেয়া পাওনার দাবিতে নেপাল, বাংলাদেশ, ভারত, মিশর এবং ফিলিপাইনের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। মজুরির দাবিতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
জানা যায়, আগামী নভেম্বরে কাতারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। এই আয়োজনকে ঘিরে নির্মাণ করা হয়েছে স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন অবকাঠামো। আর এতে কাজ করেছেন নেপাল, বাংলাদেশ, ভারত, মিশর এবং ফিলিপাইনের শ্রমিকেরা। কিন্তু এসব অভিবাসী শ্রমিকদের জোটেনি ন্যায্য পাওনা।
এ কারণে গত ১৪ আগস্ট দেশটির আল বান্দারি ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের দোহা অফিসের সামনে অন্তত ৬০ জন অভিবাসী শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সেসময় প্রতিবাদ করা বেশ কিছু শ্রমিককে আটক করা হয়। পরে বিক্ষোভকারী এসব শ্রমিককে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতার। তবে ঠিক কোন দেশের কতজনকে পাঠানো হচ্ছে তা জানা যায়নি।
এ বিষয়ে কাতার সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশটির জননিরাপত্তা আইন ভঙ্গ করার দায়ে এসব অভিবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারণ বিক্ষোভ দেখানোর সময় তারা শান্তিপূর্ণ আচরণ করেনি। ফলে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব অভিবাসী শ্রমিক তাদের মজুরি পাননি, তাদের পাওনা মজুরি দেওয়া হবে। আর অভিযুক্ত গ্রুপ আল বান্দারি ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে আগে থেকেই তদন্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লন্ডনভিত্তিক শ্রম অধিকার প্রচার সংস্থা ইকুইডেমের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, সম্প্রতি দেশটির আল বান্দারি ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের দোহা অফিসের সামনে কমপক্ষে ৬০ জন অভিবাসী শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে আবার কিছু শ্রমিক আছে-যাদের সাত মাস ধরে কোনো ধরনের বেতন দেওয়া হচ্ছে না।
ইকুইডেমের প্রধান মুস্তফা কাদরি বলেছেন, ‘আমরা বিক্ষোভে জড়িত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যার মধ্যে একজন নেপালি নাগরিক ছিলেন যাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিক্ষোভে জড়িত নেপাল, বাংলাদেশ, ভারত, মিশর এবং ফিলিপাইনের শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।’
কাদরি আরও বলেন, ‘পুলিশ পরে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে এবং তাদের একটি আ কেন্দ্রে আটকে রাখে। আটক অনেকেই সেখানে তাদের এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই শ্বাসরুদ্ধকর গরমে রাখার কথা জানিয়েছেন। যদিও এই সপ্তাহে দোহার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য, দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে বিগত ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১২ জন অভিবাসী শ্রমিক কাতারে মারা গেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, গ্যাস সমৃদ্ধ কাতারের জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ যার মধ্যে ১ কোটি ৭০ লাখ বিদেশী শ্রমিক রয়েছে।