বিশ্বে বিভিন্ন দেশে মাঙ্কিপক্স নামে নতুন একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। এতে তৈরি হয়েছে নতুন আতঙ্ক। এই ভাইরাসটি মোকাবিলায় দেশের সব বিমানবন্দর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মাঙ্কিপক্স ঠেকাতে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে দেশের সব বিমানবন্দরের যাত্রীদের।
সোমবার (২৩ মে) দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরদর্শনে এসে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে কথা বলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের সব বিমানবন্দর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিমানবন্দরে নিয়োজিত চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মকর্তারা সবাই সতর্ক। আগে করোনার জন্য প্রত্যেক যাত্রীকে যেভাবে দেখা হতো এই মাঙ্কিপক্সের বিষয়ে সেভাবে নজরদারি করা হবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, বাংলাদেশে আসার জন্য সব যাত্রীকে এখন একটি হেলদ ডিক্লারেশন ফরম পূরণ করতে হয়। সেই ফরমে আমরা মাঙ্কিপক্সের বিষয়টি যোগ করেছি। যাত্রীরা সেখানে জানাবে তাদের শরীরে এরকম কোনো লক্ষণ আছে কি না?
মফিদুর রহমান আরও বলেন, ফরমে ব্যক্তি জানাবেন তিনি মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত কি না কিংবা তার কোনো লক্ষণ আছে কি না? ওই যাত্রী মাংকিপক্সে সংক্রমিত কোনো দেশ ভ্রমণ করেছেন কি না? যাত্রীদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করবেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসকরা। এ ছাড়া মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত হলে যাত্রীর চেহারা ও শরীর দেখলেই বোঝা যাবে। চিকিৎসকরা স্বচক্ষে যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করবেন। এ ছাড়া এয়ারলাইন্সের ক্রুদের মাঙ্কিপক্সের বিষয়ে ব্রিফিং করবে বেবিচক।
এ সময় বিমানবন্দরে বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, বাংলাদেশ বিমানের এমডি, সিভিল অ্যাভিয়েশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বের ১১টি দেশে ৮০ জন মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
এর আগে, ইতালি, সুইডেন, স্পেন, পর্তুগাল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যে এ ভাইরাসে সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। সর্বশেষ একজন মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছে নেদারল্যান্ডস।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, বিরল এই ভাইরাসজনিত রোগে হালাকা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। ভাইরাসটি খুব সহয়ে মানুষের মধ্যে ছড়ায় না এবং ব্যাপক জনগণকে সংক্রমিত করার সম্ভবনাও কম।
মূলত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাঙ্কিপক্স রোগী সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এ ভাইরাসের প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে গুটি বসন্তের ভ্যাকসিন এই ভাইরাস প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর। কারণ এই দুটি ভাইরাসের গঠন প্রায় একই রকম।