যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ। এ পরিস্থিতিতে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো নগরী এবং নিউ ইয়র্ক রাজ্যে জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
দ্য গার্ডিয়ান, সিএনএনের প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সান ফ্রান্সিসকো জনস্বাস্থ্য বিভাগের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত চার হাজার ৬০০ জন শনাক্ত হয়েছেন, এর মধ্যে ১ হাজার ২৪৭ জন নিউ ইয়র্কের, ২৬১ জন সান ফ্রান্সিসকো শহরের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সান ফ্রান্সিসকোর সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ সেখানে ২৬১ জনের মাঙ্কিপক্স শনাক্তের খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে। এ নিয়ে গোটা ক্যালিফোর্নিয়ায় মোট মাঙ্কিপক্স রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৯৯ জনে।
ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, নিউ ইয়র্কে ১২৪৭ জনের মাক্সিপক্স সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনার ম্যারি টি বাসেট বৃহস্পতিবার ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে উল্লেখ করে একে জনস্বাস্থ্যে আসন্ন হুমকি বলে ঘোষণা করেছেন। এ ঘোষণা স্বাস্থ্য বিভাগগুলোর জন্য দ্রুত রোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্স দ্রুত ছড়ানোর মধ্যে টিকা সংকটও দেখা দিয়েছে। সান ফ্রান্সিসকোর স্বাস্থ্য বিভাগ ৩৫ হাজার ডোজ টিকার জন্য অনুরোধ জানালেও বৃহস্পতিবার হাতে পেয়েছে মাত্র ১২ হাজার ডোজ টিকা।
টিকার এই ঘাটতির মধ্যে রোগ মোকাবেলায় নগরীর প্রস্তুতি আরও জোরদার করতেই স্থানীয়ভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (১ অগাস্ট) থেকে সান ফ্রান্সিসকোয় জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে। স্বাস্থ্যসেবা পরিচালক ড, গ্র্যান্ট কার্লফক্স বলেছেন, আমাদের প্রস্তুত হওয়া দরকার। এই ঘোষণার ফলে আমরা নগরীর মানুষকে আরও ভাল সেবা দিতে পারব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত শনিবার মাক্সিপক্সকে বিশ্বের জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে এ রোগে সবচেয়ে নাজেহাল ওই দুই স্থানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হল। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার এখনও দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারির পদক্ষেপ নেয়নি।
তবে মাক্সিপক্স ঠেকাতে কেমন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ওয়াশিংটন তা পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং এর ওপর ভিত্তি করেই পরিস্থিতি বিবেচনায় রোগটি মোকাবেলায় জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে কিনা তা বিবেচনা করে দেখবে বাইডেন প্রশাসন, বলেছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের সেক্রেটারি জ্যাভিয়ার বেসেরা।
এদিকে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হওয়া ৪,৯০৭ জনের ৪০ শতাংশের বেশি রোগীই ক্যালিফোর্নিয়া এবং নিউ ইয়র্কের।
মাঙ্কিপক্স বিশ্বজুড়ে ৭৫টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে । আক্রান্তের সংখ্যা ১৬,০০০ ছাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে ৫ জন মারাও গেছে।
মাঙ্কিপক্স সংক্রমিত কারও ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে তা অন্যের দেহে ছড়াতে পারে। এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, মাথাব্যথা, হাড়ের জয়েন্ট, মাংসপেশিতে ব্যথা এবং দেহে অবসাদ। জ্বর হওয়ার পর দেহে গুটি দেখা দেয়।