মালয়েশিয়া প্রবাসীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। চালু হয়েছে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল-মাসুদ চৌধুরী।
উদ্বোধনের সময় নবজাতক শিশুর অ্যানরোলমেন্টের মাধ্যমে শুরু হয় ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম।
এরপর পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের কাউন্সিলর মিয়া মোহাম্মদ কিয়াম উদ্দিনের উপস্থাপনায় এক আলোচনা সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আসান।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল্লাহ আল-মাসুদ চৌধুরী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে ই-পাসপোর্ট, ই-গেইট ও মানসম্মত ইমিগ্রেশন পরিসেবার কোনো বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ নুরুস ছালাম বলেন, ই-পাসপোর্ট পৃথিবীর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। আপনারা ই-গেইট দিয়ে সহজেই ইমিগ্রেশন পার হতে পারবেন কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই।
হাইকমিশনার মো. শামিম আহসান বলেন, মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশ আরও বেশি সার্থক হয়েছে। প্রবাসীদের সেবার ব্যাপারে সব সময় আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন- ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর। বক্তব্য রাখেন- এক্সপ্যাট সার্ভিসের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমদ ও এক্সপ্যাট সার্ভিসের মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং পরিচালক অভিনেতা এসএম আরমান পারভেজ।
শুক্রবার থেকে কার্যক্রম শুরু করার জোর প্রচারণা চালালেও একদিন আগে অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয় আবেদন গ্রহণ।
এর আগে দিন ১৭ এপ্রিল হাইকমিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের কাউন্সিলর মিয়া মোহাম্মদ কিয়াম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ই-পাসপোর্ট আবেদন দাখিলের জন্য আবেদনকারীকে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়োগকৃত আউটসোর্সিং কোম্পানি ‘এক্সপ্যাট সার্ভিসের কুয়ালালামপুর এসডিএনবিএইচডি’ (ইএসকেএল)-এর মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া বাধ্যতামূলক। নিম্নোক্ত উভয় পদ্ধতিতেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া যাবে।
ওয়েব লিংক: www.expatserviceskl.com অথবা https://www.expatservicesmy.com/#/book appointment
ঠিকানা: সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টার, লেভেল-২, ব্লক ই, নং-২, জালান দুয়া অব জালান চ্যান সো লিন-৫৫২০০, কুয়ালালামপুর।
ই-পাসপোর্টের সরকারি ফি: ভিসা ক্যাটাগরি (সাধারণ শ্রমিক) ৪৮ পাতা ৫ বছর মেয়াদির জন্য ১৬৪ রিঙ্গিত (ইএসকেএল সার্ভিস চার্জ বাবদ ৩২ রিঙ্গিত)। ভিসা ক্যাটাগরি (অন্যান্য) ৪৮ পাতা ৫ বছর মেয়াদির জন্য ৫৪৫ রিঙ্গিত (ইএসকেএল সার্ভিস চার্জ বাবদ ৬০ রিঙ্গিত)।
চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রাজধানী কুয়ালালামপুরের সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টারে মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানামুখী সেবা নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়া প্রবাসীদের পাসপোর্ট নবায়নসহ অন্যান্য সেবাদানে হয়রানি ও দালালমুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়ে আসছে।
এক্সপ্যাট সার্ভিস কল সেন্টার দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়, ই-পাসপোর্ট সেবার পাশাপাশি, ধাপে ধাপে যুক্ত হয়েছে বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সার্ভিস এবং পাসপোর্ট নেই এমন প্রবাসীদের জন্য ট্রাভেল পারমিট প্রদান, যা আগে সরাসরি হাইকমিশন থেকে সংগ্রহ করতে হতো প্রবাসীদের।
সেবা গ্রহণকারী প্রবাসীদের প্রয়োজন হলে +৬০৩৯২১২০২৬৭ নম্বরে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং এক্সপ্যাট সার্ভিস দ্রুততম সময়ে প্রবাসীদের আন্তরিক সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে বলে জানানো হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- হাইকমিশনের ডিফেন্স উইং কমোডর মো. হাসান তারিক মণ্ডল, কাউন্সিলর শ্রম মো. শরিফুল ইসলাম, কাউন্সিলর রাজনৈতিক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য, দূতালয় প্রধান ফারকানা আহমদ চৌধুরী, বিএমসিসি আইয়ের পরিচালক মাহবুব আলম শাহ, কাউন্সিলর কন্স্যুলার মুর্শেদ আলম, প্রথম সচিব বাণিজ্যিক প্রণব কুমার, প্রথম সচিব শ্রম সুমন চন্দ্র দাস, কমিউনিটি নেতা দাতুশ্রী কামরুজ্জামান কামাল, মকবুল হোসেন মুকুল, সিআইপি অহিদুর রহমান ওহিদ, রাশেদ বাদল, দাতু আক্তার হোসেন, শাহীন সরদার, মনিরুজ্জামান মনির, দাতু আব্দুল রোফ লিটন, দাতুশ্রী জালাল উদ্দিন সেলিম, নাজমুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ। এ ছাড়া প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।