মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রভাব নিজ অঞ্চলে পড়ার পরও বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লন্ডনে ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রধান এবং বিরোধীদলীয় নেতা স্যার কেইর স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রয়াত ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন।
দুই নেতার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেবার পার্টির নেতাকে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি কীভাবে বাংলাদেশের ওপর বোঝা হয়ে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে জানান।
এ সময় তারা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে দেশটির সাম্প্রতিক সশস্ত্র সংঘাতের বিষয়েও আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংঘাতের প্রভাব বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ার পরও সর্বোচ্চ সংযম দেখিয়ে বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
এ সময় রানীর প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী আবারো গভীর শোক জানান। স্যার স্টারমার রানীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
লেবার পার্টির প্রধান বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক চমৎকার বন্ধনে আবদ্ধ, যা ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়েছে।
বৈঠকে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাবেক লেবার প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনের বৈঠক ও ব্যক্তিগত চমৎকার সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে লেবার পার্টির বার্তার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান।
২০১৬ সালে নিজের বাংলাদেশ সফর ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতিচারণ করেন স্যার স্টারমার। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ব্রিটিশ নাগরিকের লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত হওয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, লেবার পার্টি তরুণ প্রজন্মকে সামনে আনা এবং তাদের বিকাশে কাজ করছে, যা আরও ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের আকর্ষণ করতে পারে।
দুই নেতা গ্লোবাল সাউথ এলাকায় ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন। বিশ্বের মানুষকে খাদ্য, জ্বালানি এবং আর্থিক দুরবস্থা থেকে রক্ষা করতে এই সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এই যুদ্ধের কারণে দেয়া নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বিবেচনা করার প্রস্তাব দেন, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর প্রভাব ফেলছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেরিলিবোনের লর্ড স্বরাজ পলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইউকে হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ এ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি তার প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও শিক্ষা অংশীদারত্বকে আরও উন্নীত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্মৃতি এবং কমনওয়েলথ পরিবারে জীবনব্যাপী তার অবদানের ওপর প্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকারও দেন।